ফেসবুকে ফেক অ্যাকাউন্ট আর প্রতারকদের ফাঁদে পড়ে প্রতিনিয়ত সর্বস্ব হারাচ্ছেন ব্যবহারকারীরা। এসব সাইবার অপরাধ ঠেকাতে এবার বড়সড় পদক্ষেপ নিল টেক জায়ান্ট মেটা। প্রতারণামূলক কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে তারা ২৩ হাজারের বেশি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ও পেজ বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। মেটার অভিযোগ, এসব অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ভারত ও ব্রাজিলের ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে নানা ধরনের প্রতারণা চালানো হচ্ছিল।
প্রতারণার ধরনও ছিল অত্যন্ত চতুর। ডিপফেকসহ নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা নিজেদের পরিচয় দিত জনপ্রিয় ফিনান্স বিশেষজ্ঞ, ক্রিকেটার বা বড় ব্যবসায়ী হিসেবে। এরপর ভুয়া বিনিয়োগ পরিকল্পনা আর গ্যাম্বলিং ওয়েবসাইটের প্রচারে লিপ্ত হতো এসব ফেক অ্যাকাউন্ট।
প্রথমে ভুক্তভোগীদের বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপে রিডাইরেক্ট করে নেওয়া হতো, যেখানে বিনিয়োগের লোভনীয় পরামর্শ দেওয়া হতো। কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের এমনসব ওয়েবসাইটে পাঠানো হতো, যেগুলো দেখতে হুবহু গুগল প্লে-স্টোরের মতো। সেখান থেকেই ভুয়া গ্যাম্বলিং অ্যাপ ডাউনলোডের নির্দেশ দেওয়া হতো।
ক্রিপ্টোকারেন্সি, রিয়েল এস্টেট কিংবা শেয়ারবাজারে টাকা বিনিয়োগ করে দ্রুত কোটিপতি হওয়ার লোভ দেখিয়ে প্রতারণা করত এই অ্যাকাউন্টগুলো। এমনকি কিছু কিছু প্রতারক কোচিং গ্রুপ খুলে, সেখানে এক্সক্লুসিভ বিনিয়োগ স্কিমের গোপন তথ্য দিত বলেও জানিয়েছে মেটা।
এছাড়া, ফেসবুক মার্কেটপ্লেসেও প্রতারণার অভিযোগে বহু অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে সংস্থাটি। পণ্যের দাম দেওয়ার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে বেশি টাকা দিয়ে, পরে রিফান্ডের নামে সেলারদের প্রতারিত করতো তারা।
সবশেষে মেটা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে বলেছে, "যখনই অগ্রিম টাকা দেওয়ার কথা বলা হবে, তখনই সতর্ক হোন। আর এমন অ্যাকাউন্টকে সন্দেহ করুন ও রিপোর্ট করুন।"
এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে, প্রযুক্তির ছায়ায় অপরাধ যেমন বাড়ছে, তেমনি তা রুখতেও তৈরি হচ্ছে টেক জায়ান্টরা।