ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আজ মঙ্গলবার (২০ মে) অবশেষে প্রবেশ করেছে প্রায় ১০০টি ত্রাণবাহী ট্রাক। দখলদার ইসরায়েলের আড়াই মাসব্যাপী কঠোর অবরোধের পর এটাই সবচেয়ে বড় সংখ্যক ত্রাণের প্রবেশের ঘটনা। গতকাল সোমবার মাত্র পাঁচটি ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়, যা ছিল দীর্ঘ সময় পর প্রথম ত্রাণবাহী গাড়ি ঢোকার নজির।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক অফিস আজকের ত্রাণ প্রবেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংস্থাটির মুখপাত্র জেনস লার্কে জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা গাজায় আরও ট্রাক প্রবেশের অনুমতি চেয়েছি এবং পেয়েছি। যা গতকালের তুলনায় অনেক বেশি।” ট্রাকের নির্দিষ্ট সংখ্যা জানতে চাইলে তিনি জানান, “প্রায় ১০০টি।”
এদিকে, সোমবার গাজায় ঢোকা ট্রাকের সংখ্যা নিয়েও চালিয়েছে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করে ৯টি ট্রাক গিয়েছিল, তবে জাতিসংঘের মুখপাত্র নিশ্চিত করেন—মাত্র পাঁচটি ট্রাক প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছিল করিম আবু সালেম সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে।
আজ যেসব ত্রাণ ঢুকেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবারসহ জরুরি খাদ্যসামগ্রী। জেনস লার্কে জানান, এই ত্রাণ আগের কার্যকর পদ্ধতিতেই বিতরণ করা হবে, যা এর আগে বহুবার সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে।
তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে একটি নতুন সংস্থা গঠন করে ত্রাণ বিতরণের পরিকল্পনা করছে। যদিও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এ ধরনের নতুন কাঠামো বিতরণ ব্যবস্থায় জটিলতা সৃষ্টি করবে এবং ব্যর্থ হতে পারে।
উল্লেখ্য, গাজার এই মানবিক সংকট দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। বিদ্যুৎহীনতা, খাদ্য ও পানির অভাব এবং চিকিৎসার সংকটে বিপর্যস্ত গাজাবাসীদের বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা এই ত্রাণ সহায়তা। আজকের এই ত্রাণ প্রবেশ সাময়িক স্বস্তি দিলেও দীর্ঘমেয়াদে টেকসই মানবিক সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় হস্তক্ষেপ প্রয়োজন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।