মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে খালাস দিয়ে তার মুক্তির আদেশ জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে আপিল বিভাগের খালাসের সংক্ষিপ্ত রায় পাওয়ার পর ট্রাইব্যুনাল থেকে এ আদেশ দেওয়া হয়। মুক্তির আদেশের কপি ইতোমধ্যে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আজহারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির বলেন, “সব প্রক্রিয়া শেষ হলে আমরা আশা করছি আগামীকাল সকালে তিনি মুক্তি পাবেন।”
এর আগে সকালে আপিল বিভাগ থেকে তার মৃত্যুদণ্ড বাতিল করে সংক্ষিপ্ত রায় প্রকাশ করা হয়। এতে জামায়াত নেতা আজহারের মুক্তিতে আর কোনো আইনি বাধা থাকল না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
তিন পৃষ্ঠার ওই রায়ে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে আজহারের খালাস দেন। বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন— বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি ইমদাদুল হক, বিচারপতি মো. আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
এ রায়ে বলা হয়, অবিলম্বে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। সেই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি আপিল করেন। আপিলের শুনানি শেষে গত ৮ মে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয় এবং ২৭ মে রায়ের দিন ধার্য করা হয়।
বাংলাদেশের বিচার ইতিহাসে এটাই প্রথম, যখন মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া কোনো ব্যক্তি আপিল বিভাগ থেকে খালাস পেলেন।
আজহারের পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক এবং ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক এবং প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন গাজী এম এইচ তামিম।
রায় ঘোষণার সময় আদালত প্রাঙ্গণে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে ছিলেন নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, মাওলানা আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, ঢাকা উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, মাসুদ সাঈদী, ডা. হেলাল উদ্দিনসহ আরও অনেকে।