সরকারিভাবে বর্ষা প্রবেশ না করলেও কর্নাটক ইতোমধ্যেই বিপর্যয়ের মুখে। অকাল অতিবৃষ্টিতে রাজ্যের ৩১টি জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কোথাও বন্যা, কোথাও আবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন হাজারো মানুষ। পাহাড়ি এলাকায় দেখা দিয়েছে নতুন আতঙ্ক—ভূমিধস।
বিশেষ করে দক্ষিণ কর্নাটকের মেঙ্গালুরু অঞ্চলে একাধিক স্থানে ধস নামার খবর পাওয়া গেছে। মেঙ্গালুরুর উল্লালে ভূমিধসের কারণে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। এছাড়া রাজ্যজুড়ে বন্যা ও জমে থাকা পানিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৬৭ জন। শুধু রাজধানী বেঙ্গালুরুতেই জমা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন ৫ জন।
এ প্রসঙ্গে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া জানিয়েছেন, বর্ষা আসার আগেই রাজ্যে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ মানুষ সরাসরি এই দুর্যোগের শিকার। সরকার আশঙ্কা করছে, পরিস্থিতি ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে এগোচ্ছে।
দুই বছর আগের স্মৃতি ঘেঁটে অনেকেই বলছেন, ইতিহাস আবারও ফিরে আসছে। তখন বেঙ্গালুরুতে বৃষ্টির পানি জমে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল যে, অফিসে যেতে কোম্পানিগুলোকে নৌকা ভাড়া করতে হয়েছিল। এবারও তার পুনরাবৃত্তি দেখতে পাচ্ছেন নগরবাসী।
পরিবেশবিদ ও আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি ২০১৮ সালের কেরালার বন্যার মতো ভয়াবহ পরিণতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। অথচ এখনো সরকারিভাবে বর্ষা প্রবেশ করেনি কর্নাটকে।
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় রাজ্যের দুর্যোগ প্রতিরোধ দফতরের হাতে রয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকা। সেই অর্থ থেকেই নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির পুনর্নির্মাণ বা সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে—প্রাক-বর্ষার এই দুর্যোগ কেন? সরকারি সূত্র বলছে, অতিবৃষ্টির পাশাপাশি জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হলো নিকাশি ব্যবস্থার বিপর্যয়। সেচ দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের ৪১ হাজার নিকাশি খালের মধ্যে ১৪ হাজারই এখন দখলদারদের কবলে। খাল ভরাট করে বানানো হয়েছে ঘরবাড়ি।
এই পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং যেকোনো ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।