একসময় হলিউডের ‘ড্রিম কাপল’ হিসেবে খ্যাত ছিলেন ব্র্যাড পিট ও অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। তাঁদের একসঙ্গে ডাকা হতো ‘ব্র্যাঞ্জেলিনা’ নামে—যেন এক নামেই দুটি জীবনের প্রতিচ্ছবি। কিন্তু সেই সম্পর্কের পরিসমাপ্তি ঘটে ২০১৬ সালে, যখন জোলি বিচ্ছেদের আবেদন করেন। বহু ভক্তের কাছে তা ছিল এক অবিশ্বাস্য ধাক্কা।
বিচ্ছেদের প্রায় আট বছর পর অবশেষে এই সম্পর্ক ভাঙনের বিষয়ে মুখ খুলেছেন ব্র্যাড পিট। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জিকিউ ম্যাগাজিনকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি জানান, “বিচ্ছেদটা মানসিকভাবে কঠিন ছিল, তবে শেষ পর্যন্ত সেটি কেবলই এক ধরনের আইনি আনুষ্ঠানিকতা ছিল। খুব আলাদা কিছু মনে হয়নি—শুধু একটা অধ্যায়ের শেষ।”
ব্র্যাড পিট আরও বলেন, “আমার ব্যক্তিগত জীবন সব সময় সংবাদমাধ্যমের চর্চার কেন্দ্রে থেকেছে। এটা সহজ ছিল না, বরং অনেক সময় অত্যন্ত বিরক্তিকর হয়ে উঠেছিল।”
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দীর্ঘ আট বছরের আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়। জোলির আইনজীবীদের তরফ থেকে দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, “এই পুরো সময়ে জোলি ও তাঁর সন্তানরা চরম মানসিক চাপে ছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ায় তাঁরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন।”
ব্র্যাড ও অ্যাঞ্জেলিনার ছয় সন্তান—ম্যাডক্স, প্যাক্স, জাহারা, শিলো এবং যমজ নক্স ও ভিভিয়েন। বিচ্ছেদের পর সন্তানদের সঙ্গে ব্র্যাড পিটের সম্পর্ক অনেকটাই জটিল হয়ে পড়ে। এমনকি গুঞ্জন রয়েছে, কয়েকজন সন্তান তাঁদের পদবি থেকে 'পিট' নামটি বাদও দিয়েছেন।
তবে এসব ঝড় পেরিয়ে এখন অনেকটাই স্থিরতায় ফিরেছেন ব্র্যাড পিট। তাঁর জীবনে নতুন করে এসেছেন গয়না ডিজাইনার ইনেস ডি র্যামন। এই সম্পর্ক নিয়ে ব্র্যাড বলেন, “ইনেসের সঙ্গে আমার সম্পর্কটা একেবারেই স্বাভাবিকভাবে গড়ে উঠেছে। ওর সঙ্গে সময় কাটানো আমাকে অনেক মানসিক শান্তি দেয়।” দুজনই চান, সম্পর্কটি ব্যক্তিগতভাবেই গড়ে উঠুক—মিডিয়ার আলোচনার বাইরে।
পেশাগত দিক থেকেও বেশ সক্রিয় ব্র্যাড পিট। চলতি বছর মুক্তি পাচ্ছে তাঁর নতুন সিনেমা এফওয়ান, যেখানে তাঁকে দেখা যাবে একজন রেসিং ড্রাইভারের চরিত্রে। আশির দশকের পটভূমিতে নির্মিত এই স্পোর্টস ড্রামা মুক্তি পাবে আগামী ২৫ জুন। এর পাশাপাশি, ২০২৬ সালে মুক্তি পেতে যাচ্ছে তাঁর আরেকটি অ্যাকশন অ্যাডভেঞ্চারধর্মী ছবি হার্ট অফ দা বিস্ট।
সবকিছু মিলিয়ে, অতীতের গাঢ় ছায়া পেছনে ফেলে ব্র্যাড পিট এখন এগিয়ে যাচ্ছেন এক নতুন জীবনের পথে—যেখানে আছে স্থিরতা, পরিপক্বতা ও আত্মবিশ্বাস।