ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরনের মোমের মূর্তি প্যারিসের বিখ্যাত গ্রেভিন মিউজিয়াম থেকে সরিয়ে এনে রাশিয়ার দূতাবাসের সামনে রেখে প্রতিবাদ জানিয়েছে গ্রিনপিস। সোমবার (৩ জুন) পরিবেশবাদী এই সংগঠনের তিন কর্মী এই কর্মসূচি চালায়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে এই তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবাদের মাধ্যমে গ্রিনপিস ফ্রান্সের রাশিয়ার সঙ্গে চলমান ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় সরকারের দুর্বল অবস্থানের বিরুদ্ধে বার্তা দিতে চায়।
এক বিবৃতিতে গ্রিনপিস জানায়, "ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন রাশিয়ার সাথে ফ্রান্সের সব ধরনের বাণিজ্যিক চুক্তি বাতিল এবং ইউরোপজুড়ে সাহসী ও টেকসই পরিবেশগত রূপান্তর নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তিনি গ্রেভিন মিউজিয়ামের মতো একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে মূর্তি স্থাপনের যোগ্য নন।"
ঘটনার পরপরই ফ্রান্স সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। গ্রেভিন মিউজিয়ামও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
গ্রিনপিসের এক মুখপাত্র জানান, কর্মীরা সাধারণ দর্শনার্থীর বেশে মিউজিয়ামে প্রবেশ করে পরিকল্পিতভাবে ম্যাকরনের মূর্তিটি সরিয়ে নেয়। বাইরে অপেক্ষমাণ অন্য কর্মীদের একটি গাড়িতে করে মূর্তিটি দ্রুত স্থানান্তর করা হয়। পুরো অভিযানে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
গ্রিনপিস ফ্রান্সের পরিচালক জঁ-ফ্রঁসোয়া জুলিয়ার বলেন, “আমরা ইউক্রেনকে ফ্রান্স ও ইউরোপের সমর্থনের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু যদি আমরা নৈতিকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে চাই, তাহলে ইউক্রেনকে সমর্থন করে একই সঙ্গে রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ গ্যাস, ইউরেনিয়াম ও রাসায়নিক সার আমদানি চালিয়ে যাওয়া যায় না।”
প্রসঙ্গত, ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও স্পেন বর্তমানে ইউরোপের এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানিকারক শীর্ষ দেশগুলোর অন্যতম। ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে উদ্যোগ নিলেও, বেশ কিছু দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি—যেগুলোর মেয়াদ ২০৪১ সাল পর্যন্ত—বাতিল করা সম্ভব হয়নি। এসব চুক্তির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ফ্রান্সের টোটাল এনার্জিস এবং ন্যাচারগির মতো বড় কোম্পানিগুলো।
গ্রিনপিস জানিয়েছে, তারা ম্যাকরনের মূর্তিটি ফেরত দেবে, তবে নির্দিষ্ট সময় জানায়নি।