আমাদের জনগণের ওপর যখন বোমা পড়ছে, তখন আলোচনা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। তিনি দাবি করেছেন, চলমান সংঘাতে শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র জড়িত, যদিও এই দাবির পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দেননি।
শনিবার (২১ জুন) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আরাঘচি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা অত্যন্ত বিপজ্জনক হবে। তবে তিনি কূটনৈতিক আলোচনায় ফিরতে ইচ্ছুক বলেও জানান।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইরানে হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছিলেন বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। তবে ইরান যদি পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে রাজি হয়, তাহলে তিনি হামলা থেকে সরে আসতে পারেন বলে জানিয়েছেন।
আরাঘচি বলেন, “আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চাই। অতীতে কূটনীতি ফল দিয়েছে, ভবিষ্যতেও দিতে পারে। তবে আলোচনায় ফিরতে হলে আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে।”
অন্যদিকে, ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কৌশলে পরিবর্তন এনেছে ইরান। আগের মতো ব্যাপকসংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র না ছুড়ে এখন আরও উন্নত ও নির্ভুল ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
শনিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ ফুরিয়ে আসছে বলে ইসরায়েল যে দাবি করছে, তা সত্য নয়। তিনি জানান, ইরান এখন এমন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করছে, যেগুলো ক্লাস্টার বোমা বহনে সক্ষম এবং নির্দিষ্ট উচ্চতায় গিয়ে বিস্ফোরিত হয়ে প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আঘাত হানছে।
তিনি বলেন, “আমরা একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছি এবং তা মার্কিন থাড, প্যাট্রিয়ট, অ্যারো ৩, অ্যারো ২, ডেভিডস স্লিং ও আয়রন ডোমের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে লক্ষ্যে পৌঁছেছে।” তবে তিনি সেই লক্ষ্যবস্তুর নাম প্রকাশ করেননি।
তিনি আরও বলেন, “ক্ষেপণাস্ত্রের সংখ্যা কমে যাওয়ায় খুশি হওয়ার কিছু নেই। ইরান এখন আরও শক্তিশালীভাবে ভারসাম্য তৈরি করেছে, ইসরায়েলের উচিত নীরব থাকা।”
এদিকে, ইসরায়েলি হামলায় ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩০ জনে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে শনিবার (২১ জুন) এ তথ্য জানায় ইরানি সংবাদমাধ্যম নউর নিউজ। আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে সাড়ে তিন হাজার মানুষ।
এর আগে, রোববার ইরান জানিয়েছিল ২২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্ট নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এই সংখ্যা ছিল ৬৫৭ জন। এবারই প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে হতাহতের হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করলো ইরান।