যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস হওয়ার পর তেহরান যখন মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে সরাসরি সাহায্যের আশা করছে, তখন রাশিয়া কেন নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে— সে বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রাশিয়া ও ইরানের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও পুতিন জানিয়েছেন, চলমান উত্তেজনার মাঝে মস্কো নিরপেক্ষ থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি ইসরায়েলে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক রুশভাষী জনগোষ্ঠীকে উল্লেখ করেছেন।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসের বরাতে সোমবার (২৩ জুন) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, মিত্রদের প্রতি রাশিয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন, তাদের ‘উসকানিদাতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন পুতিন।
সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামের এক অধিবেশনে পুতিন বলেন, “সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রুশ ফেডারেশনের প্রায় ২০ লাখ মানুষ বর্তমানে ইসরায়েলে বসবাস করছে। এখন ইসরায়েলকে প্রায় রুশভাষী রাষ্ট্র বলা চলে। তাই রাশিয়ার সমসাময়িক ইতিহাসে আমরা বিষয়টি সর্বদা বিবেচনায় রাখি।”
তিনি আরও জানান, রাশিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করেন এবং মস্কো ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) একজন পর্যবেক্ষক সদস্য।
উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইরানের একটি সামরিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল। এর পাল্টা জবাব দিতে শুরু করে ইরান। এরপর গত ২১ জুন রাতে ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে এক সামরিক অভিযানে ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র ১৪ হাজার কেজি ওজনের বাঙ্কার-বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করে।
এই হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “এটি ছিল অসাধারণ এক সামরিক সাফল্য। ইরানের মূল পরমাণু স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে।”
প্রতিক্রিয়ায় ইরান ইসরায়েলের দিকে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানান, ইরান প্রথমে প্রতিশোধ নেবে, তারপর আলোচনার পথে ফিরে যাবে। তিনি বলেন, “ইরান আলোচনার টেবিলে ছিল, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল তা উড়িয়ে দিয়েছে।”