সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে করা মামলায় পাকিস্তানের অনুকূলে রায় দিয়েছে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত স্থায়ী সালিশি আদালত (পারমানেন্ট কোর্ট অব আরবিট্রেশন – পিসিএ)। আদালত তার ‘সাপ্লিমেন্টাল অ্যাওয়ার্ড অব কমপিটেন্স’ রায়ে স্পষ্টভাবে জানায়, ভারত একতরফাভাবে চুক্তিটি স্থগিত করতে পারে না।
পিসিএ জানায়, চুক্তির কোন ধারা ভারতকে একতরফাভাবে এটি স্থগিত করার ক্ষমতা দেয় না। বরং ভারত ও পাকিস্তানের পারস্পরিক সম্মতিতেই কেবল চুক্তিটি বাতিল হতে পারে। আদালতের এই রায় পাকিস্তানকে একটি ‘আইনি জয়’ এনে দিয়েছে বলেই মনে করছে ইসলামাবাদ।
এর আগে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়। ওই ঘটনায় ভারত সরাসরি ইসলামাবাদকে দায়ী করে এবং প্রমাণ ছাড়াই সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত ঘোষণা করে। পাকিস্তান এই সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধের পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করে এবং ১৯৬৯ সালের ভিয়েনা কনভেনশন অন ল অফ ট্রিটিজ লঙ্ঘনের অভিযোগে পিসিএতে মামলা করে।
শুক্রবার (২৭ জুন) আদালতের চূড়ান্ত রায়ে বলা হয়, “চুক্তিটি একতরফাভাবে স্থগিত করা যায় না এবং এটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।” এই রায়কে স্বাগত জানিয়ে পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, “ভারতের একতরফা পদক্ষেপের বিপরীতে আন্তর্জাতিক আদালত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছে।”
তবে আদালতের রায়কে ‘স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান’ করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “ভারত কখনোই এই কথিত সালিশি আদালতকে স্বীকৃতি দেয়নি।” মন্ত্রণালয় আরও জানায়, “এই সালিশি ট্রাইব্যুনালের গঠন নিজেই সিন্ধু পানি চুক্তির লঙ্ঘন এবং আদালতের যেকোনো কার্যক্রম ও রায় ভারতের দৃষ্টিতে অবৈধ ও বাতিল।”
সিন্ধু পানি চুক্তি নিয়ে দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী দেশের এই নতুন দ্বন্দ্ব আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।