ঢাকা , বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫ , ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর মীর কাসেম আলীর মেয়ের আবেগঘন পোস্ট পুলিশের নতুন ইউনিফর্ম : ভেতরে-বাইরে মিশ্র আলোচনা কার বিরুদ্ধে কী আদেশ দিলেন ট্র্যাইব্যুনাল সহিংসতার ষড়যন্ত্র সফল হবে না: পরিবেশ উপদেষ্টা ধানমন্ডি ৩২ ভাঙতে এক্সকাভেটর নিয়ে ছাত্রজনতা, উত্তেজনা চরমে শেখ হাসিনার রায় -ঢাকায় নিরাপত্তা জোরদার, তল্লাশি-চেকপোস্ট ইথিওপিয়ায় প্রথমবারের মতো মারবার্গ ভাইরাস শনাক্ত, কীভাবে ছড়ায়? ড্রামের ভেতর পাওয়া মরদেহের রংপুরে দাফন সকালে চা নাকি কফি, কোনটা আপনার জন্য ভালো? মঙ্গল অভিযানে নাসার দুই মহাকাশযান অঙ্গীকার করেছিলাম, যত শক্তিশালী হোক না কেন, প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়া হবে: তাজুল ইসলাম যে চার বিষয়ে হবে গণভোট, একটি প্রশ্নে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ দিয়ে মতামত দেশে এই মুহূর্তে গৃহযুদ্ধের ভাব বিরাজ করছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে জুলাই সনদ লঙ্ঘিত হয়েছে: সালাহউদ্দিন আহমদ বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক সন্ধ্যায় গণভোট ও সংসদ নির্বাচন একই দিনে: প্রধান উপদেষ্টা অস্কার মনোনীত অভিনেত্রী স্যালি কার্কল্যান্ড মারা গেছেন প্রতিদিন কতটুকু চা খাওয়া যাবে? রোববারের মধ্যে দাবি না মানলে যমুনার সামনে অবস্থানের ঘোষণা জামায়াতসহ ৮ দলের আল-কায়েদার সাথে সম্পর্ক এখন অতীত: সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট

স্টেডিয়াম নয়, হাসপাতাল–স্কুল চাই’—এবার জেন–জি আন্দোলনে উত্তাল মরক্কো

  • আপলোড সময় : ০৪-১০-২০২৫ ০১:৫৮:০১ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৪-১০-২০২৫ ০১:৫৮:০১ অপরাহ্ন
স্টেডিয়াম নয়, হাসপাতাল–স্কুল চাই’—এবার জেন–জি আন্দোলনে উত্তাল মরক্কো
মরক্কো বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুটবল স্টেডিয়াম তৈরি করছে। ২০৩০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ যৌথভাবে আয়োজনের অংশ হিসেবে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু গত শনিবার থেকে রাস্তায় নামা প্রতিবাদকারীদের জন্য এই ১ লাখ ১৫ হাজার আসনের স্টেডিয়াম এবং নির্মাণাধীন অন্যান্য ফুটবল অবকাঠামো—যার খরচ আনুমানিক ৫ বিলিয়ন ডলার—একধরনের আঘাত। তাদের মতে, এটি এমন একটি সরকারের উদাহরণ, যার অগ্রাধিকার ভুল।সেতত শহরের ২৫ বছর বয়সী কমিউনিকেশন ম্যানেজার হাজর বেলহাসান বলেন, ‘আমি প্রতিবাদ করছি। কারণ, আমি চাই আমার দেশ ভালো হোক। আমি মরক্কো ছাড়তে চাই না এবং আমি চাই না যে দেশ আমাকে অবজ্ঞা করুক।’




জেন-জেড ২১২—নামের একটি গোষ্ঠী এই আন্দোলনের সমন্বয় করছে। ২১২ মূলত দেশটির আন্তর্জাতিক ডায়ালিং কোডের সঙ্গে সম্পর্কিত। ডিসকর্ড, টিকটক এবং ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে এই প্রতিবাদ সমন্বয় করা হচ্ছে। নেপালের সাম্প্রতিক জেন–জি আন্দোলনের অনুপ্রেরণা নিয়ে তরুণ মরক্কানরা চান, তাদের সমস্যাগুলো সমাধানে সরকার তৎপরতা এবং উদ্যম দেখাক, যেমনটি বিশ্বমানের ক্রীড়া আয়োজনের ক্ষেত্রে দেখা যায়।




গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১০টি শহরে শুরু হওয়া প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারী লোকের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। মানুষ ধ্বনি তুলছে—‘বিশ্বকাপ নয়, স্বাস্থ্যসেবা অগ্রাধিকার হোক’ এবং ‘আমরা চাই হাসপাতাল, স্টেডিয়াম নয়’। পুলিশ কিছু এলাকায় নির্বিচার দমন-পীড়ন চালিয়ে লোকদের গ্রেপ্তার করছে। কিছু জায়গায় পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠেছিল, যার ফলে তিনজন প্রতিবাদকারী মারা গেছেন।


প্রধানমন্ত্রী আজিজ আখানউচ গত বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, তিনি সংলাপের জন্য উন্মুক্ত। তবে কেন্দ্রীয় নেতাহীন এই আন্দোলন নিশ্চিত করেছে যে তারা বাস্তব পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত থামবে না। তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে—





সবার জন্য বিনা মূল্যে এবং মানসম্মত শিক্ষা
সবার জন্য সহজলভ্য সরকারি স্বাস্থ্যসেবা
যথাযথ এবং সাশ্রয়ী বাসস্থান
উন্নত গণপরিবহন
জীবনধারণের প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো ও ভর্তুকি
বেতন এবং পেনশন বৃদ্ধি
যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব হ্রাস
ফরাসির পরিবর্তে ইংরেজিকে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে গ্রহণ (আরবির পর)
সেপ্টেম্বরে আগাদির একটি হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগে আট নারীর মৃত্যু এই আন্দোলনকে আরও বেগবান করে তোলে। রিপোর্টে বলা হয়, এই মৃত্যু প্রতিরোধ করা যেত যদি স্বাস্থ্যসেবা, যথাযথ সরঞ্জাম ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক থাকত।




বিভিন্ন হিসাবে দেখা গেছে, ২০২৩ সালে মরক্কোর প্রতি ১০ হাজার জনের বিপরীতে মাত্র ৭ দশমিক ৮ জন ডাক্তার ছিলেন, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৩ জনের সুপারিশের তুলনায় অনেক কম।




সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের খবর পড়ে এবং বন্ধুর অনুপ্রেরণায় হাজর বেলহাসান গত সোমবার প্রতিবাদে যোগ দেন। বন্ধুটি তাঁর নিজের ভিডিও পাঠাচ্ছিল। সেই ভিডিওগুলো হাজর তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করতেন। এরপর বন্ধুর ভাই গ্রেপ্তার হন। রাতভর আটক রেখে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। হাজর বলেন, এটি তাঁকে সড়কে নামতে প্রভাবিত করেছিল। তিনি বললেন, ‘আমরা যৌক্তিক, মৌলিক দাবি করছি। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা এমন জিনিস, যেগুলোকে অগ্রাধিকার পেতেই হবে।’




প্রতিবাদে যাওয়ার সময় পুলিশ মানুষকে জড়ো হওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা এবং গ্রেপ্তার করছিল। বুধবার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাশিদ এল খালফি জানান, এখন পর্যন্ত ৪০৯ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ছাড়া, ২৬০ পুলিশ কর্মকর্তা এবং ২০ প্রতিবাদী আহত হয়েছে। সহিংস সংঘর্ষে ৪০টি পুলিশ যানবাহন এবং ২০টি ব্যক্তিগত গাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে।




২৩ বছর বয়সী আন্দোলনকারী হাকিম (ছদ্মনাম) বলেছেন, ‘আমি শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলাম, কিন্তু পুলিশের সামনে পড়ে যাই। এখানে প্রায় ৪০ জন ছিল। সরকার ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। আমার বাবা সাম্প্রতিক সময়ে স্ট্রোক করেছেন। যদি আমাদের কিছু সঞ্চয় না থাকত, তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে না পাঠাতাম, তিনি মারা যেতেন।’

হাকিম সরকারি শিক্ষাব্যবস্থা প্রাইভেট শিক্ষাব্যবস্থার তুলনায় ‘অনেক পিছিয়ে’ বলে মনে করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সম্মানজনক জীবন চাই। আমরা চাই বিশ্বকাপ হোক, কিন্তু মাথা উঁচু করে, মুখোশের আড়ালে নয়।’



পুলিশের এই হিংসাত্মক প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করেছে মরক্কোর মানবাধিকার সংস্থা, প্রতিবাদী ও বিরোধী পক্ষগুলো। জেন–জি ২১২ আন্দোলন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নয়। হাজর বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন না, আমাদের কোনো নেতা নেই। হয়তো এ জন্যই পুলিশ গ্রেপ্তার করছিল এবং সরকার চুপ থাকছিল।’

কিন্তু কিছু এলাকা থেকে সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ১ অক্টোবর রাতে পুলিশ স্টেশন ঘেরাও করার চেষ্টাকালে লক্লিয়া শহরে তিন প্রতিবাদী মারা যান। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনী আগুন ধরানো এবং অস্ত্র চুরির চেষ্টা করার পর গুলি চালায়।



প্রতিবাদীরা হামলা ও লুটপাট নিন্দা করেছে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার গ্রুপ গঠন করেছে। তারা বারবার শান্তি ও সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যে সংলাপের জন্য উন্মুক্ত তা বিশ্বাস করছেন না। গতকাল শুক্রবার থেকে তারা সরকার বিলুপ্ত করাতে বাদশাহর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। হয়তো এটি অনেক বড় দাবি, কিন্তু প্রতিবাদীরা রাস্তা থেকে ঘরে ফেরার মানসিকতায় নেই।



২০৩০ সালের দিকে তাকিয়ে হাজর বলেন, ‘অবশ্যই আমরা বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে উত্তেজিত। আমরা ফুটবল ভালোবাসি, এটি আমাদের রক্তে। কিন্তু আমাদের ভিত্তি নেই। আমরা চাই, স্টেডিয়াম তৈরি হোক, কিন্তু আমাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা তার আগে গড়তে হবে।’
 

কমেন্ট বক্স
হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর মীর কাসেম আলীর মেয়ের আবেগঘন পোস্ট

হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর মীর কাসেম আলীর মেয়ের আবেগঘন পোস্ট