ভারতের উত্তর প্রদেশের মুজাফফরনগরের বুধানায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি না পেয়ে নিজের শরীরে আগুন দিয়ে উজ্জ্বল রানা (২২) নামে এক কলেজছাত্র আত্মহত্যা করেছেন। রবিবার (৯ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, উজ্জ্বল রানা ডিএভি কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। বকেয়া ফি না দেওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষ তাকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেননি। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার (৮ নভেম্বর) কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থান নেন তিনি। এ ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ পুলিশকে ডেকে আনেন। এ সময় পুলিশ তাকে নির্যাতন করেছেন অভিযোগে গায়ে আগুন দেন উজ্জ্বল। তাকে উদ্ধার করে দিল্লির একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার সন্ধ্যায় মারা যায় ওই ছাত্র।
এতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় বোন সালোনি রানা কলেজের ব্যবস্থাপক অরবিন্দ গর্গ, অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার, শিক্ষক সঞ্জীব কুমার এবং তিন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে সাব-ইন্সপেক্টর নন্দ কিশোর এবং কনস্টেবল ভিনীত ও জ্ঞানবীরকে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
নিহতের বোন সালোনি রানা বলেন, আমার ভাই পরীক্ষায় বসার অনুমতি না পেয়ে প্রতিবাদ করছিল। কলেজের প্রিন্সিপাল তখন পুলিশ ডেকে আনেন। পুলিশ এসে তাকে অপমান করে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এতে আমার ভাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং গায়ে আগুন দেয়।
উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী তিনি জেলা কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে, এ ঘটনায় নিহতের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজন সদস্যকে সরকারি চাকরি দেওয়ার দাবি জানায় কংগ্রেস। পাশাপাশি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ফি নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন প্রণয়ন এবং আর্থিকভাবে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য একটি সহায়তা তহবিল গঠনেরও দাবি জানানো হয়।
উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি অজয় রায় বলেন, উজ্জ্বলের মৃত্যু কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটি রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার করুণ চিত্র। এটি আসলে সিস্টেমের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ড। শিক্ষাকে সম্পূর্ণভাবে বাণিজ্যে পরিণত করা হয়েছে, যার চাপে দরিদ্র শিক্ষার্থীরা ভেঙে পড়ছেন।
Mytv Online