ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
‘পুতিন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে দ্বিধা করবেন না’ জাতীয় দলে ফেরা নিয়ে মুখ খুললেন সাকিব প্রথমবার আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো রাশিয়া বাংলাদেশকে ৩০ হাজার টন সার দিবে রাশিয়া খালেদা জিয়াকে আনতে পেরে আমরা গর্বিত: প্রধান উপদেষ্টা মোদি–আদানি দুজনেই দুর্নীতিগ্রস্ত: সংবাদ সম্মেলনে রাহুলের অভিযোগ প্রীতি ম্যাচ খেলতে ভারতে আসছে আর্জেন্টিনা নতুন কমিশন জনগণের ভোটাধিকার ফেরানোর কাজ করবে, এটাই চাওয়া: মির্জা আব্বাস ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে থাকায় রাসিকের ১৫৯ কর্মচারীকে অব্যাহতি সেনাকুঞ্জে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া যুক্তরাষ্ট্রে অভিযোগের পর আদানি গ্রুপের শেয়ারে ধস ব্যারিস্টার সুমনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ লিখে রাখেন, আমি আবারও এমপি-মন্ত্রী হবো : শাহজাহান ওমর আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন বাহারুল আলম মূল সড়কে না হলেও অলিগলিতে চলার অনুমতি চান অটোরিকশা চালকরা নতুন সিইসি হলেন সাবেক সচিব নাসির উদ্দীন নির্বাচন কমিশনার হলেন যারা বার্সার প্রস্তাব পেয়েও যে কারণে যোগ দেননি বুফন মারা গেছেন সাবেক ব্রিটিশ উপ-প্রধানমন্ত্রী জন প্রেসকট রিকশাচালকদের হটালো সেনাবাহিনী, যানচলাচল শুরু রামপুরায়

চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে প্রেম-বিয়ে, নাগরিকত্ব চান বাংলাদেশি নারী

  • আপলোড সময় : ১৫-১১-২০২৪ ১১:১০:৩৮ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-১১-২০২৪ ১১:১০:৩৮ পূর্বাহ্ন
চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়ে প্রেম-বিয়ে, নাগরিকত্ব চান বাংলাদেশি নারী
২০০৭ সালে মায়ের চিকিৎসা করাতে পরিবারের সাথে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে গিয়েছিলেন সিলেটের এক নারী। এরপর ওই রাজ্যেরই এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয়, তারপর প্রেম ও বিয়ে। আর এবার ভারতের নাগরিকত্ব চাইলেন ওই নারী।
চিকিৎসার জন্য ২০০৭ সালে আসামে যাওয়ার পর শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন ওই পরিবারের মেয়ে স্থানীয় এক যুবকের প্রেমে পড়েন। শেষমেষ তাকে বিয়ে করে তিনি থেকে যান সেখানেই। তবে তার ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ কখনোই প্রশস্ত ছিল না।২০১৯ সালে বিজেপি সরকার হিন্দু-সহ ছয়টি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে একটি আইন আনে। সেই আইনের মাধ্যমে এবার ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছেন বাংলাদেশের ওই নারী।
সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে বলছে, মায়ের চিকিৎসার জন্য যখন ভারতে এসেছিলেন ওই নারী, তখন তার বয়স অনেকটাই কম। হাসপাতালেই তার সঙ্গে দেখা হয় আসামের বদরপুর শহরের এক যুবকের। তিনিও তার বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন শিলচরে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার প্রক্রিয়া অনেকটাই জটিল এবং এই সময় তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন যুবকটি। এখান থেকেই তাদের বন্ধুত্ব এবং প্রেম। এদিকে মায়ের চিকিৎসার সময় ফুরিয়ে এলে যখন বাড়ি ফেরার সময় আসে, ওই নারী প্রেমের কথা জানান পরিবারকে।

দুজনেই হিন্দু পরিবারের, তাই হিন্দু রীতি মেনে তাদের বিয়ে হয় এবং বাংলাদেশের নারী থেকে যান ভারতেই। পরবর্তীতে তাদের এক সন্তানও হয়। করিমগঞ্জ জেলার বদরপুর শহরে স্বামীর সঙ্গে সুখে সংসার করছেন ওই নারী। কিন্তু ভারতের নাগরিক কখনোই হননি তিনি। এরই মধ্যে নতুন করে এনআরসি-র প্রক্রিয়া শুরু হয় আসামে। বহু মানুষের কাছে ফরেনার্স ট্রাইবুনাল থেকে নোটিশ আসে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় আসামে। সমস্যায় পড়েন ওই নারী।২০১৯ সালে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ পেশ করে বর্তমান সরকার। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তান থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, শিখ এবং পার্সি সম্প্রদায়ের মানুষেরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আইন পাস হলেও বহুদিন এর প্রণয়নবিধি প্রকাশ করেনি সরকার। এবছর মার্চ মাসে শেষমেষ সেই প্রণয়ন বিধি প্রকাশ হয়। তারপরেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন ওই নারী।এপ্রিল মাসে আসামের বরাক উপত্যকার বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি শরণার্থী এই আইনের মাধ্যমে ভারতের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন। এর মধ্যেই ছিলেন বদরপুরের ওই নারী। কিন্তু কিছুদিনের মধ্য়েই তিনি তার আবেদন প্রত্যাহার করে নেন।

স্থানীয় আইনজীবীদের মতে, সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব দাবি করতে গেলে আবেদনকারীকে প্রথমে প্রমাণ করতে হয়, তিনি ধর্মীয় নির্যাতনের ফলে তার দেশ ছেড়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাত বারোটা পর্যন্ত যারা ভারতে প্রবেশ করেছেন, শুধু তারাই আবেদন করতে পারেন। ভারতে প্রবেশ করার পর এই দেশে থাকার প্রমাণও দিতে হয় এই আইনে নাগরিকত্ব চাইলে।আইনজীবী তথা ফরেনার্স ট্রাইবুনালের বিচারক ধর্মানন্দ দেব জানান, গতবছর ভারতের নির্বাচন কমিশন আসামের বদরপুরের একটি অংশকে করিমগঞ্জ জেলা থেকে বাদ দিয়ে কাছাড়ের সঙ্গে জুড়ে দেয়। তার কথায়, “বদরপুরের ওই নারী প্রথমে করিমগঞ্জের বাসিন্দা হিসেবে আবেদন করেছিলেন। তবে পরবর্তীতে দেখা যায় তার বাড়ি কাছাড় জেলার আওতায়। ফলে তিনি তার আবেদন প্রত্যাহার করে নেন এবং পরে ফের আবেদন করেন। তিনি বাংলাদেশে পড়াশোনা করেছেন এবং তার পরিবারের লোকেরা সেখানেই থাকেন। ২০০৭ সাল থেকে এদেশেই রয়েছেন তিনি‌। ফলে সিএএ-তে আবেদনে প্রয়োজনীয় নথি দেখাতে অসুবিধা হয়নি তার। এবার বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়াটি এগিয়ে যাচ্ছে এবং আমরা আশাবাদী শিগগিরই তিনি ভারতের নাগরিক হবেন।”

ধর্মানন্দের মতে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রণয়নের বিধি কিছুটা অসম্পূর্ণ এবং জটিল। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ বা পাকিস্তান থেকে যারা ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন, তারা সবাই সেই দেশের নথি সঙ্গে করে আনতে পারেননি। অথচ সিএএ-র বিধিতে বলা হয়েছে আবেদনকারীকে অন্তত এমন একটি নথি দেখাতেই হবে। হয়তো এই কারণেই অনেকে আবেদন করছেন না। আবার প্রক্রিয়াটি এতটাই জটিল, অনেকে তা সামাল দিতে পারেন না। আমরা স্বেচ্ছায় তাদের সাহায্য করছি এবং আমার হাত ধরে এখন পর্যন্ত নয়জন আবেদন করেছেন। এর মধ্যে একজন নাগরিকত্ব পেয়েছেন।”চলতি বছরের ১৪ আগস্ট শিলচর শহরের বাসিন্দা, ৫০ বছরের দোলন দাস প্রথম বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থী হিসেবে সিএএ-র মাধ্যমে ভারতের নাগরিকত্ব পান। তাকে পরবর্তীতে নিয়ে যাওয়া হয় গুয়াহাটি এবং সেখানে সরকারি কর্মকর্তারা তার হাতে নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট তুলে দেন। তার পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যও আবেদন করেছেন, তবে তাদের নথি যাচাইয়ের প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। দোলন দাসের নাগরিকত্ব পাওয়ার পর আরো কয়েকজন সাহস করে আবেদন করেছেন।

সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে বাংলাদেশের ওই নারীর পরিবার কথা বললেও তারা পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি। তাদের আইনজীবী এখনই ওই নারীর নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়েছেন। কারণ, নাগরিকত্ব পাওয়ার প্রক্রিয়া এখনো সম্পূর্ণ হয়নি।

কমেন্ট বক্স
‘পুতিন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে দ্বিধা করবেন না’

‘পুতিন পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারে দ্বিধা করবেন না’