ঢাকা , শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
প্রবাসী ভোটারদের সেবা বাড়াতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ এনআইডি ডিজির পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন মঞ্চে আজহারী, অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীর ‘মৎস্যকে শিল্প বানালে এর মূল চরিত্র নষ্ট হয়ে যাবে’ তুরস্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত দুদক কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা, যোগাযোগের পরামর্শ মহাপরিচালকের নারায়ণগঞ্জে নিখোঁজের একদিন পর মিলল শিক্ষার্থীর মরদেহ বিরোধীতা সত্ত্বেও ইমরান খানের নামে স্টেডিয়াম নামকরণের সিদ্ধান্ত ভেঙে পড়া রাষ্ট্রকে গঠন বিএনপির পক্ষে সম্ভব : তারেক রহমান যখন কাউকে প্রয়োজন হবে, তখনই আপনি একা : পরীমণি আজহারুলকে মুক্তি না দিলে ৩ কোটি জামায়াত নেতা-কর্মী জেলে যেতে প্রস্তুত: শফিকুর রহমান ডিপিএলে নাম লেখাচ্ছেন সাকিব আল হাসান শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল কুড়াতে যাওয়া শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ খিলগাঁও গ্যারেজপট্টির আগুনে পুড়ে ছাই ২৪ গাড়ি চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি, দাবি পুলিশের মিরপুরে একাধিক দোকান ও বাসায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি জুলাই বিপ্লবের কৃতিত্ব কাদের, জানালেন মির্জা ফখরুল বোনের শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন প্রবাসী জেলেনস্কিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না ট্রাম্প মরুভূমি ভ্রমণের সময় তাঁবুতে কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়ায় নিহত সৌদি দম্পতি

১৭ বছর পরও জমিনে জীবনে সিডরের ক্ষত

  • আপলোড সময় : ১৫-১১-২০২৪ ০২:৩৪:৪৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-১১-২০২৪ ০২:৩৪:৪৪ অপরাহ্ন
১৭ বছর পরও জমিনে জীবনে সিডরের ক্ষত
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর। সেদিন বাংলাদেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে আঘাত হানে ভয়ানক ঘূর্ণিঝড় সিডর। আঘাতের সময় সিডরের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৬০ কিলোমিটার। তবে এ সময় দমকা হাওয়ার বেগ উঠেছিল ঘণ্টায় ৩০৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। সিডরের প্রভাবে উপকূলে ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। তীব্র ঝড়ের সঙ্গে জলোচ্ছ্বাস পুরো উপকূল বিশেষ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল উপকূলের জেলাগুলো লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায়। ভেসে যায় ঘরবাড়ি, পশুপাখি আর অসংখ্য মানুষ। আজ সেই ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের ১৭ বছর পূর্তি। আজও সেই দুঃসহ দিনের কথা মনে করে আঁতকে ওঠেন উপকূলবাসী। এখনো তাদের তাড়িয়ে বেড়ায় সেই ভয়াল সিডরের ভয়। যাদের সিডর প্রত্যক্ষ করার অভিজ্ঞতা আছে তাদের অনেকেই সাগরে লঘুচাপ হলেই ভীত হয়ে ওঠেন।এর কারণ অবশ্য, সিডর-পরবর্তী সময়ে উঁচু শক্ত বেড়িবাঁধের দাবি উঠলেও সেই দাবি পূরণ হয়নি আজও। প্রতিনিয়ত ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে ঢুকছে জোয়ারের পানি, নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, ভেসে যাচ্ছে মাছের ঘের।সরকারি তথ্য অনুযায়ী সিডরের আঘাতে বরগুনা জেলার ১ হাজার ৩৪৫ জন মানুষ নিহত হয়েছিল। নিখোঁজ হয়েছিল আরও ১৫৬ জন; যাদের খোঁজ আজও মেলেনি। এ ছাড়া ৩০ হাজার ৪৯৯টি গবাদি পশু ও ৬ লাখ ৫৮ হাজার ২৫৯টি হাঁস-মুরগি মারা যায়। জেলার ২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬১ পরিবারের সবাই কমবেশি ক্ষতির শিকার হয়। সম্পূর্ণভাবে গৃহহীন হয়ে পড়ে জেলার ৭৭ হাজার ৭৫৪টি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্ত ওইসব মানুষের জীবন এখনো পুরো স্বাভাবিক হয়নি।

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, বরগুনাসহ সিডর বিধ্বস্ত উপকূলীয় জনপদে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উন্নয়নে ব্যাপক কাজ হলেও তার অধিকাংশ চলে গেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এনজিওর পকেটে। তাই সিডর বিধ্বস্ত এই জনপদের মানুষের মধ্যে ত্রাণ কিংবা ঋণ বিতরণ করা হলেও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তেমন কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এখন পর্যন্ত বরগুনায় নেই কোনো আবহাওয়া অফিস।পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ছয়টি উপজেলার ২২টি পোল্ডারে ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় তিন কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। এর মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ১ হাজার ২৫ মিটার, আমতলীতে ১২০ মিটার, তালতলীতে ৫৪০ মিটার, পাথরঘাটায় ৫৮৫ মিটার, বামনা উপজেলার ৩৪০ মিটার, বেতাগীতে ১৯০ মিটার বাঁধ নদীতে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। এ ছাড়া জলোচ্ছ্বাস হলে জেলার অধিকাংশ বেড়িবাঁধই প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

বরগুনা সদর উপজেলার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার নাম নলটোনা। যেখানে সিডরের এক বছর আগে থেকেই বেড়িবাঁধ ছিল না। সিডরের সময় সেখানে ২০ ফুটের মতো পানি বৃদ্ধি পেয়েছিল। সিডরের তাণ্ডব থামার পরের দিনই সেখানে অর্ধশতাধিক মানুষের লাশ পাওয়া যায়। তখনও এলাকাটি পানির নিচে হাবুডুবু খাচ্ছিল। লাশ দাফনের জন্য কোনো স্থান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। লাশগুলো নিয়ে আসা হয় বরগুনা-নিশানবাড়িয়া সড়কের পাশে পশ্চিম গর্জনবুনিয়া গ্রামে। দাফনের কাপড় ছাড়াই ২৯ জনকে ১৯টি কবরে মাটি চাপা দেওয়া হয়।মাঝের চরের বাসিন্দা আবদুর রশিদ বলেন, আমাদের এই চরটি অর্ধেক বরগুনা আর অর্ধেক পাথরঘাটায় অবস্থিত হওয়ায় কোনো উপজেলা থেকেই তেমন কোনো বরাদ্ধ দেওয়া হয় না। সিডরের পর থেকে নানা দুর্যোগে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে স্বাভাবিক জোয়ারেই আমাদের চর প্লাবিত হয়। বন্যা কিংবা জলোচ্ছ্বাস এলে তো কথাই নেই।সদর উপজেলার ফুলঝুরি গ্রামের বাসিন্দা মো. রাসেল বলেন, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের সময় কর্র্তৃপক্ষের বাঁধ নির্মাণে টনক নড়ে। ঝড় থেমে গেলে তাদের আর খবর থাকে না। বর্ষা মৌসুমে বাঁধ নির্মাণ করা হয় এ কারণে বাঁধের স্থায়িত্ব থাকে না।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, বরগুনার নদীতীরবর্তী মানুষের নিরাপত্তার জন্য বেশ কয়েকটি প্রকল্পের মাধ্যমে বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে কিছুটা হলেও জোয়ার জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে রক্ষা পাবে এখানকার বাসিন্দারা। সেই সঙ্গে যে এলাকাগুলো অধিক ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে সেখানকার স্থানীয়দের কীভাবে সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে নিয়ে আসা যায়, সে বিষয়েও কাজ চলমান রয়েছে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, সিডর বাংলাদেশের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। এর ক্ষতিও অপূরণীয়। সিডর-পরবর্তী সময়ে সরকার ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংগঠন দুর্যোগের হাত থেকে বরগুনাবাসীকে রক্ষা করার জন্য প্রচুর সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করেছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় এখন আগের থেকে অনেক বেশি সক্ষম ও সচেতন আমরা।

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ
প্রবাসী ভোটারদের সেবা বাড়াতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ এনআইডি ডিজির

প্রবাসী ভোটারদের সেবা বাড়াতে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ এনআইডি ডিজির