ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত ফয়সালকে পালাতে সহযোগিতাকারী প্রাইভেট কারের মালিক নুরুজ্জামানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম এ আদেশ দেন।
শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ আদালতকে বলেন, ঘটনার পর মামলার প্রধান আসামি ফয়সালকে পালাতে সহায়তা করেন নুরুজ্জামান।রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ফয়সালের মা-বাবাসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ এবং ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে মামলার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। ফয়সালকে পালাতে সহায়তার জন্য ওই আসামি গাড়ি ম্যানেজ করে দেন। পিপি আরও বলেন, ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ফয়সালের অবস্থান জানা যাবে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। হাদিকে নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন। তাই তার রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।
আসামি নুরুজ্জামান নোমানীর পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তখন আদালত জানতে চান, তার কিছু বলার আছে কি না। তখন নোমানী বলেন, অনলাইন ও হোয়াটসঅ্যাপে ফয়সালের সঙ্গে আমার পরিচয়। সে আগে আমার কাছ থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়েছে। গাড়ি ভাড়া করে সে সাটুরিয়া যেত এবং আলাউদ্দিন পার্কে যেত। প্রায় ৯ মাস আগে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। তবে গত তিন মাস আমাদের কোনো সাক্ষাৎ হয়নি। তিনি আরও বলেন, আমি গাড়ির ব্যবসা করি। ফয়সাল আমার কাছ থেকে গাড়ি ভাড়া নেয়। বুধবারও সে আমার কাছ থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে সাটুরিয়া গিয়েছিল, সেখান থেকে আবার আলাউদ্দিন পার্কে আসে।শুক্রবার সে আবার আমার কাছ থেকে গাড়ি ভাড়া চেয়েছিল। কিন্তু আমার সব গাড়ি তখন ট্রিপে ছিল। তাই আমি আমার পরিচিত সুমন ভাইকে ট্রিপটি দিয়েছিলাম।
বিচারক তার কাছে জানতে চান, ওই ড্রাইভারকে তিনি চিনেন কি না। নোমানী বলেন, হ্যাঁ। বিচারক তিনি কোথায় আছেন, তা জানতে চাইলে নোমানী বলেন, ডিবিতে আছে। আমার সঙ্গে তাকেও নিয়ে এসেছে।নোমানী আরও বলেন, শুক্রবার ফয়সাল ফোন করে বলেছিল, ভাই, আমি বিয়ে করেছি। স্ত্রীকে নিয়ে একটু ঝামেলা হচ্ছে। গাড়িটা মৎস্য ভবনে পাঠিয়ে দেন। সুমন গাড়ি নিয়ে মৎস্য ভবনে যায়। পরে ফয়সাল বারবার ফোন করে গাড়ি বিএনপি বাজার (আগারগাঁও) পাঠাতে বলে। তখন আমি তাকে বলি, সুমন ভাইকে ফোনে কল দিতে। পরে তারা যোগাযোগ করে। তিনি আরও বলেন, দুষ্টু লোকটির সঙ্গে আমার পরিচয়ের সময় তার লম্বা চুল ছিল। এখন টিভিতে দেখি ছোট চুল।
বিচারক তাকে বলেন, রিমান্ড মানে শাস্তি নয়। তদন্ত কর্মকর্তাকে সহযোগিতা করুন, আপনার কিছু হবে না। এরপর আদালত আদেশ দেন।
Mytv Online