পুনরুজ্জীবিত পর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রয়েছে আপিলটি।
এর আগে ২০ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ছিল আপিলটি। ওইদিন জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির জানান, চূড়ান্ত শুনানির জন্য আপিলটি কার্যতালিকায় উঠেছিল। তবে শুনানি হয়নি। তারই ধারাবাহিকতায় আজ সেটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় রয়েছে।
চলতি বছরের মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত ৪ সদস্যের বেঞ্চ নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপিল পুনরুজ্জীবিত চেয়ে জামায়াতের আবেদন মঞ্জুর করেন।
ওইদিন আদালত বিলম্ব মার্জনা করে আপিলটি শুনানির জন্য রিস্টোর করেন। অর্থাৎ পুনরুজ্জীবিত করেন। ওইদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এহসান আব্দুল্লাহ সিদ্দিক ও শিশির মনির।
ওইদিন দলটির আইনজীবীরা আশা প্রকাশ করেন, চূড়ান্ত বিচারে নিবন্ধন ফিরে পাবেন তারা। কাটবে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়েও জটিলতা।
অবশেষে নিবন্ধন ফিরে পেতে আইনি লড়াইয়ে ফিরল জামায়াত। দলের নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করা হলেও শুধুমাত্র আইনজীবী উপস্থিত না থাকার কারণ দেখিয়ে তাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
৫ আগস্টের পর নিবন্ধন ফিরে পেতে আইনি লড়াইয়ে নামে দলটি। আবেদন করা হয় খারিজ হওয়া আপিলটি পুনরুজ্জীবিত করার। যার শুনানি হয়। শুনানি শেষে জামায়াতের আবেদন মঞ্জুর করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের ৪ সদস্যের বেঞ্চ।
দলটির নিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট শিশির মনির জানান, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের সঙ্গে সংবিধানের অনেক প্রশ্ন জড়িত থাকলেও সেসময় একতরফাভাবে দলটির আপিল খারিজ করে দেয়া হয়।
নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার সঙ্গে জড়িয়ে আছে দলটির প্রতীক দাঁড়িপাল্লার বিষয়টিও। কেননা সুপ্রিম কোর্টের প্রতীক হওয়ায় কোনো দল দাঁড়িপাল্লাকে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত রয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘নিবন্ধন ফিরে পেলে প্রতীক নিয়েও জটিলতা কেটে যাবে।’
জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল চেয়ে ২০০৮ সালে হাইকোর্টে রিট করে তরিকত ফেডারেশন। এ রিটের আলোকে ২০১৩ সালে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। যা বহাল থাকে আপিল বিভাগেও।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ফের আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসে। গত জুলাই মাস থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা কোটা প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে। এ আন্দোলনে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ছাত্র-জনতা সরকার পদত্যাগের দাবি তোলে। এর মধ্যে ১ আগস্ট সরকার অঙ্গসংগঠনসহ জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধের আবেদন বাতিলের উদ্যোগ নেয়। গত ২৮ আগস্ট সরকার আগের নিষিদ্ধের আদেশ বাতিল করে। এরপর আপিল বিভাগে নিবন্ধন মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য আবেদন করা হয়।