সিপিডি শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশকে চামচা পুঁজিবাদ থেকে চোরতন্ত্রে রূপান্তরিত করা হয়েছে। রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, এবং আমলাদের সক্রিয় সহযোগিতায় আইনসভা ও নির্বাহী বিভাগসহ সবাই এই চোরতন্ত্রের অংশ হয়েছে। এর মূল উৎস হিসেবে ২০১৮ সালের নির্বাচনকে দায়ী করেন তিনি।
আজ (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এসব কথা বলেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও এতে বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে চোরতন্ত্রের পর্যালোচনা করেছে। প্রথমে রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের ভূমিকা বেশি মনে হলেও পরে উঠে আসে যে উর্দি পরা বা উর্দি ছাড়া আমলাদের ভূমিকা এই প্রক্রিয়ায় বেশি কার্যকর ছিল।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও উল্লেখ করেন যে, দেশে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে চারটি খাতে: ব্যাংক, অবকাঠামো, জ্বালানি এবং তথ্যপ্রযুক্তি।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য পাঁচটি সুপারিশ তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে—গৃহীত পদক্ষেপ জনসমক্ষে প্রকাশ করা, আগামী ছয় মাসের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা স্পষ্ট করা, দুই বছরের একটি পরিকল্পনা নির্ধারণ, এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া স্থবির না করা এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে একটি ফোরাম বৈঠকের আয়োজন করা।
এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, "বাংলাদেশের সক্ষমতা ও আয়তন অনুসারে আমরা আর এলডিসির উপযোগী দেশ নই। ২০২৬ সালে উত্তরণ বাধাগ্রস্ত হলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।"
সংবাদ সম্মেলনে কমিটির অন্যান্য সদস্য যেমন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, জাহিদ হোসেন, এবং বুয়েটের অধ্যাপক ম. তামিম বিভিন্ন খাতে চুরির পরিমাণ ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, "ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচন এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ধ্বংস নতুন সংকট তৈরি করেছে। যদি প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার না হয়, তবে পুরোনো ধ্বংসাত্মক খেলোয়াড়েরা আবার ফিরে আসতে পারে।"
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এ কে এনামুল হক, আবু ইউসুফ, তাসনীম সিদ্দিকী ও ইমরান মতিন প্রমুখ।