পর্যটক কম সেন্টমার্টিনে, দুশ্চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

আপলোড সময় : ০৯-১২-২০২৪ ১১:৫০:৪৩ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৯-১২-২০২৪ ১১:৫০:৪৩ পূর্বাহ্ন
প্রতিবছর অক্টোবরের শেষ থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটন মৌসুম শুরু হয়। কিন্তু এবার নানা জটিলতা পেরিয়ে তা শুরু হয়েছে ১ ডিসেম্বর থেকে। তবে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের দাবি, নানা বাধ্যবাধকতা থাকায় সেন্টমার্টিন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন পর্যটকরা। আর এতে আশঙ্কাজনক হারে কমেছে পর্যটকের সংখ্যা। এমনকি সরকার নির্ধারিত সংখ্যক পর্যটকের দেখাও মিলছে না।কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া থেকে রোববার (৮ অক্টোবর) সকাল ৬টায় যাত্রা শুরু করে পর্যটকবাহী কর্ণফুলী জাহাজ। তারপর পরই আরও তিনটি জাহাজ যাত্রা করে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে। বঙ্গোপসাগরের বুকে টানা ৬ ঘণ্টা চলার পর সেন্টমার্টিনের জেটিতে পৌঁছে এই চারটি জাহাজ।

অষ্টম দিনের মতো রোববার কর্ণফুলী, বার আউলিয়া, কেয়ারী ও বে ক্রুজ জাহাজ যোগে দ্বীপে মোট ১ হাজার ১৩২ জন যাত্রী দ্বীপে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন পর্যটকবাহী জাহাজ মালিকদের সংগঠন সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর।তিনি জানান, আট দিনে মোট ৭ হাজার ১০৫ জন পর্যটক গেছেন দ্বীপে। এর মধ্যে ১ ডিসেম্বর ১টি জাহাজে গেছেন ৬৫৩ জন, ২ ডিসেম্বর ১টি জাহাজে ৬৫৬ জন, ৩ ডিসেম্বর ১টিতে ৭৪০ জন, ৪ ডিসেম্বর ৩টি জাহাজে ১ হাজার, ৫ ডিসেম্বর ২টি জাহাজে ৬৫৬ জন, ৬ ডিসেম্বর ৪টি জাহাজে ১ হাজার ৫৫০ জন, ৭ ডিসেম্বর ২টিতে ৭০৭ জন দ্বীপে গেছেন। যা সরকারের নির্ধারিত প্রতিদিনের ২ হাজার জনেরও কম।

মূলত গত ২২ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভায় সেন্টমার্টিনের বিষয়ে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ অক্টোবর একই মন্ত্রণালয়ের উপসচিব অসমা শাহীন স্বাক্ষরিত একটি পরিপত্র জারি করেন। যে পরিপত্রে ৫টি বিষয় উল্লেখ্য রয়েছে।যেখানে বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিনে নৌ যান চলাচলের বিষয়টি বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি গ্রহণ করে অনুমতি প্রদান করবে। নভেম্বর মাসে দ্বীপে পর্যটক গেলেও দিনে ফিরে আসতে হবে। রাত্রিযাপন করতে পারবেন না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপন করা যাবে। পর্যটকের সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ২ হাজারের বেশি হবে না। দ্বীপে রাতে আলো জ্বালানো যাবে না, শব্দ দূষণ সৃষ্টি করা যাবে না। বার-বি-কিউ পার্টি করা যাবে না।

এ সিদ্ধান্তের পর দ্বীপে কড়াকড়ি বিষয় ও ভ্রমণের জন্য নিবন্ধন থাকার কথা প্রচার হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত ২ হাজার পর্যটকের দেখাও মিলছে না বলে জানান সী ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর।তিনি বলেন, ‘দ্বীপে পর্যটক নিবন্ধিত করতে কোনো জটিলতা নেই। জাহাজের টিকেট কাটলে নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি শেষ।’

এদিকে, কাঙ্ক্ষিত পর্যটকের দেখা না পেয়ে চিন্তিত দ্বীপের বাসিন্দাসহ পর্যটক সংশ্লিষ্টরা।সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম জানান, ১৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটি সাড়ে ১০ হাজার মানুষ বসবাস করেন। এখন সময় দ্বীপের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস ছিল সমুদ্রে মাছ আহরণ। কিন্তু গত ২০ বছরে বদলে গেছে এ আয়ের মাধ্যম। এখন দ্বীপের শতভাগ মানুষ পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল। নভেম্বর থেকে মার্চ এ ৫ মাসের দ্বীপ ভ্রমণকারী পর্যটক নিয়ে করা আয়ে পুরো বছর জীবিকা পরিচালনা করে দ্বীপের মানুষ। কিন্তু এ বছর ৫ মাস সময় পাওয়া যাচ্ছে না। সরকারের সিদ্ধান্ত মতে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি প্রতিদিন ২ হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। আর গত ৮ দিনে যাওয়া পর্যটকের সংখ্যা প্রতিদিন গড়ে ১ হাজারের কম। ফলে দ্বীপের মানুষ চিন্তিত রয়েছেন।

বাজারের রেস্তোরাঁ পরিচালনাকারী ব্যবসায়ী আবু তালেব জানান, গত ১৪ বছর আগেও তার ৩টি ফিশিং ট্রলার ছিল। তা আর নেই। একটি রেস্তোরাঁ ও কয়েক রুমের একটি কটেজ পরিচালনা করে সংসারের খচর জোগান দেন। এবারে যত সংখ্যক পর্যটক আসছে তাতে খুবই চিন্তায় আছেন। দুই মাসে আয় কি হবে তা বুঝতে পারছেন না তিনি।অন্যদিকে, দ্বীপের জেটি ঘাট বাজার থেকে পশ্চিম পাড়ার দূরত্ব এক কিলোমিটারের কম হলেও গফুর মিয়া নামের এক ইজিবাইক চালক দাবি করেন ৩ শত টাকা ভাড়া।


অফিস :

MyTv Bhaban, 155, 150/3, Hatirjheel, Dhaka-1219

Phone. ☎ +880255128896 ; Fax. +880255128899

Email. admin@mytvbd.tv