মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্ট দেন, যাতে তিনি বৃহৎ বাংলার একটি ম্যাপও যুক্ত করেন। তবে তাঁর এই পোস্টটি সমালোচনার মুখে পড়ে এবং কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তিনি এটি সরিয়ে ফেলেন।
পোস্টের শুরুতে মাহফুজ আলম লিখেন, "বিজয় এসেছে, তবে সামগ্রিক নয়, মুক্তি এখনো বহুত দূরে!" এরপর তিনি বলেন, "হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত জনপদ পুনরুদ্ধার ব্যতিত পোকায় খাওয়া পূর্ব পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশ দিয়ে আমরা মুক্তিকে ছুঁতে পারব না।"
এই মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয় এবং কিছু সময় পরই মাহফুজ আলম তাঁর পেজ থেকে পোস্টটি মুছে ফেলেন।
মাহফুজ আলমের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
বিজয় এসেছে, তবে সামগ্রিক নয় মুক্তি এখনো বহুত দূরে!
হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এ অঞ্চলের সভ্যতা ও সংস্কৃতির যে গড়ন, যা আদতে উত্তর ভারতের চাইতে আলাদা - মুসলিম হিন্দু নির্বিশেষে, সে সভ্যতা ও সংস্কৃতির পূর্ণ বিকাশ ও হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত জনপদ পুনরুদ্ধার ব্যতিত পোকায় খাওয়া পূর্ব পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশ দিয়ে আমরা মুক্তিকে ছুঁতে পারব না। মানুষের মুক্তির প্রশ্নের সাথে সভ্যতা ও সংস্কৃতির মুক্তির প্রশ্ন ও সম্পর্কিত।
ভারত একটা ঘেরাও ও গেটো কর্মসূচি নিয়েছে। '৪৭ এ হিন্দু মৌলবাদী ও কুলীনদের অখন্ড বাংলাবিরোধিতা থেকে এ পোকায় খাওয়া খন্ড বাংলা দেশের জন্ম। ঐ দেশকে রাষ্ট্র হিসাবে পত্তন করতে হয়েছে পাকিস্তানি হায়েনাদের বিরুদ্ধে একটি জনযুদ্ধের মাধ্যমে। আবার, এ রাষ্ট্রের জন্মদাগ তথা ভারত নির্ভরতা ও ভারতের আধিপত্য মুক্ত রাখতে ’৭৫ আর ’২৪ ঘটাতে হয়েছে। দুই ঘটনার ব্যবধান পঞ্চাশ বছর। কিন্তু, আদতে কিছুই পরিবর্তন হয়নি। আমরা ভূগোল ও বন্দোবস্তে আটকা পড়ে গিয়েছি।
তাই আমরা বলছি, নূতন ভূগোল ও বন্দোবস্ত লাগবে। একটা খন্ডিত ভূমি, একটা জন্মদাগ নেয়া রাষ্ট্র দিয়ে হয় না, সে ভূমি ও রাষ্ট্রের সভ্যতাগত আকাঙক্ষা ও রূপান্তর আর সাংস্কৃতিক হেজেমনি লাগে। নইলে ’৭১ আর ’২৪ এর বয়ান ও শ্লোগান কেবল মিছে চিৎকার হয়ে পড়ে রইবে।
’৭১ এর পরে ’৭৫ আর ’২৪ এ দুইবার সুযোগ আসার পরেও আমরা ’৭২ এর মুজিববাদী বন্দোবস্তকে পুরাপুরি নস্যাৎ কতে পারিনি। আমরা চেষ্টা করতেই পারি। বারবার প্রাণ দিতে পারি। কিন্তু, এ খন্ডিত , ঘেরাওকৃত, গেটো বাংলা দিয়ে আমরা সত্যিকার বিজয়, স্বাধীনতা কিংবা মুক্তি অর্জন করতে পারব না।
মনে রাখতে হবে, দক্ষিণ এশিয়ায় আশরাফ মুসলিমদের ভূমি পাকিস্তান, ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুদের ভূমি ভারত, আর হিন্দু মুসলিম দলিত নির্বিশেষে নিপীড়িত মজলুম মানুষের ভূমি বাংলা দেশ। তাই, বাংলা দেশকে এ খাঁচা ছেড়ে বেরুতেই হবে। দক্ষিণ এশিয়া নয়, পুরা গ্লোবাল সাউথ বাংলাদেশের নেতৃত্ব অনুসরণ করবে।
বাংলাদেশের প্রাণ আজ ’২৪ এ শহিদদের কোরাবানির ভেতর দিয়ে মুক্তি খুঁজছে। আর, ’২৪ কেবল শুরু, শেষবিন্দু নয়। এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব জানেন তাদের লড়াই অসমাপ্ত। এ লড়াই শেষ করতে তারা এখনো জীবন দিতে প্রস্তুত। যাবেও হয়তো তাদের জীবন!
তবু, আমাদের শাহাদাতের উপর দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় ও মুক্তি ত্বরান্বিত হোক!
বি: দ্র: এ ছবিটা ভাসানী, আবুল হাশিম, যোগেন মন্ডল, সোহরাওয়ার্দীসহ সব জাতীয় নেতাই পাকিস্তান আন্দোলনে বিতরণ করেছেন। তাজউদ্দীন ও শেখ মুজিবুর রহমানও তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
বাংলাদেশ শুরুর বিন্দু, অন্তবিন্দু নয়।
’৪৭ হয়ে ৭১ থেকে ২৪ এ শেষ নয়,
ইতিহাস এখনো অপেক্ষমান।
সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা!
পোস্টের শুরুতে মাহফুজ আলম লিখেন, "বিজয় এসেছে, তবে সামগ্রিক নয়, মুক্তি এখনো বহুত দূরে!" এরপর তিনি বলেন, "হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত জনপদ পুনরুদ্ধার ব্যতিত পোকায় খাওয়া পূর্ব পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশ দিয়ে আমরা মুক্তিকে ছুঁতে পারব না।"
এই মন্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয় এবং কিছু সময় পরই মাহফুজ আলম তাঁর পেজ থেকে পোস্টটি মুছে ফেলেন।
মাহফুজ আলমের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
বিজয় এসেছে, তবে সামগ্রিক নয় মুক্তি এখনো বহুত দূরে!
হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এ অঞ্চলের সভ্যতা ও সংস্কৃতির যে গড়ন, যা আদতে উত্তর ভারতের চাইতে আলাদা - মুসলিম হিন্দু নির্বিশেষে, সে সভ্যতা ও সংস্কৃতির পূর্ণ বিকাশ ও হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত জনপদ পুনরুদ্ধার ব্যতিত পোকায় খাওয়া পূর্ব পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশ দিয়ে আমরা মুক্তিকে ছুঁতে পারব না। মানুষের মুক্তির প্রশ্নের সাথে সভ্যতা ও সংস্কৃতির মুক্তির প্রশ্ন ও সম্পর্কিত।
ভারত একটা ঘেরাও ও গেটো কর্মসূচি নিয়েছে। '৪৭ এ হিন্দু মৌলবাদী ও কুলীনদের অখন্ড বাংলাবিরোধিতা থেকে এ পোকায় খাওয়া খন্ড বাংলা দেশের জন্ম। ঐ দেশকে রাষ্ট্র হিসাবে পত্তন করতে হয়েছে পাকিস্তানি হায়েনাদের বিরুদ্ধে একটি জনযুদ্ধের মাধ্যমে। আবার, এ রাষ্ট্রের জন্মদাগ তথা ভারত নির্ভরতা ও ভারতের আধিপত্য মুক্ত রাখতে ’৭৫ আর ’২৪ ঘটাতে হয়েছে। দুই ঘটনার ব্যবধান পঞ্চাশ বছর। কিন্তু, আদতে কিছুই পরিবর্তন হয়নি। আমরা ভূগোল ও বন্দোবস্তে আটকা পড়ে গিয়েছি।
তাই আমরা বলছি, নূতন ভূগোল ও বন্দোবস্ত লাগবে। একটা খন্ডিত ভূমি, একটা জন্মদাগ নেয়া রাষ্ট্র দিয়ে হয় না, সে ভূমি ও রাষ্ট্রের সভ্যতাগত আকাঙক্ষা ও রূপান্তর আর সাংস্কৃতিক হেজেমনি লাগে। নইলে ’৭১ আর ’২৪ এর বয়ান ও শ্লোগান কেবল মিছে চিৎকার হয়ে পড়ে রইবে।
’৭১ এর পরে ’৭৫ আর ’২৪ এ দুইবার সুযোগ আসার পরেও আমরা ’৭২ এর মুজিববাদী বন্দোবস্তকে পুরাপুরি নস্যাৎ কতে পারিনি। আমরা চেষ্টা করতেই পারি। বারবার প্রাণ দিতে পারি। কিন্তু, এ খন্ডিত , ঘেরাওকৃত, গেটো বাংলা দিয়ে আমরা সত্যিকার বিজয়, স্বাধীনতা কিংবা মুক্তি অর্জন করতে পারব না।
মনে রাখতে হবে, দক্ষিণ এশিয়ায় আশরাফ মুসলিমদের ভূমি পাকিস্তান, ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুদের ভূমি ভারত, আর হিন্দু মুসলিম দলিত নির্বিশেষে নিপীড়িত মজলুম মানুষের ভূমি বাংলা দেশ। তাই, বাংলা দেশকে এ খাঁচা ছেড়ে বেরুতেই হবে। দক্ষিণ এশিয়া নয়, পুরা গ্লোবাল সাউথ বাংলাদেশের নেতৃত্ব অনুসরণ করবে।
বাংলাদেশের প্রাণ আজ ’২৪ এ শহিদদের কোরাবানির ভেতর দিয়ে মুক্তি খুঁজছে। আর, ’২৪ কেবল শুরু, শেষবিন্দু নয়। এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব জানেন তাদের লড়াই অসমাপ্ত। এ লড়াই শেষ করতে তারা এখনো জীবন দিতে প্রস্তুত। যাবেও হয়তো তাদের জীবন!
তবু, আমাদের শাহাদাতের উপর দিয়ে চূড়ান্ত বিজয় ও মুক্তি ত্বরান্বিত হোক!
বি: দ্র: এ ছবিটা ভাসানী, আবুল হাশিম, যোগেন মন্ডল, সোহরাওয়ার্দীসহ সব জাতীয় নেতাই পাকিস্তান আন্দোলনে বিতরণ করেছেন। তাজউদ্দীন ও শেখ মুজিবুর রহমানও তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
বাংলাদেশ শুরুর বিন্দু, অন্তবিন্দু নয়।
’৪৭ হয়ে ৭১ থেকে ২৪ এ শেষ নয়,
ইতিহাস এখনো অপেক্ষমান।
সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা!