এম ভি আল বাখেরা জাহাজের মাস্টারের ওপর ক্ষোভ থেকে তাঁকে হত্যা করেন সাত খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত আকাশ মন্ডল ইরফান। পরে জাহাজে থাকা অন্য সদস্যরা বিষয়টি ফাঁস করে দিতে পারেন, এমন আতঙ্ক থেকে বাকি সাতজনকে গলা কেটে ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে মাস্টারসহ সাতজনের মৃত্যু হলেও প্রাণে বেঁচে যান জাহাজের সুকানি জুয়েল।র্যাব জানায়, নিয়মিত বেতন-ভাতা ও ছুটি না পাওয়ার জেরে এমভি আল-বাখেরা জাহাজের মাস্টারের প্রতি ক্ষিপ্ত ছিলেন ইরফান। ঘটনার সময় খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে প্রথমে মাস্টারকে হত্যা করেন তিনি। এই হত্যাকাণ্ডের আগে সবাইকে খাবারের সঙ্গে দুই পাতা ঘুমের ওষুধ মেশান অভিযুক্ত আকাশ মন্ডল ইরফান।
গ্রেপ্তার ইরফানকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত এসব ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আজ দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লা নগরের শাকতলা এলাকায় র্যাব-১১-এর সিপিসি-২ কুমিল্লা কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিং করেন উপ–অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করা জাহাজটিতে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১১ ও র্যাব-৬ যৌথ অভিযান চালিয়ে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে আকাশকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে। তিনি জাহাজটিতে প্রায় ৮ মাস ধরে লস্কর পদে কর্মরত ছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার সাতজনকে খুনের ঘটনায় মামলা করেন জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ। মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ডাকাত দলকে।গতকাল দায়ের করা মামলায় জানা যায়, ওই জাহাজে ৮ জন নন, ৯ জন ছিলেন। আর ওই ব্যক্তি হলেন আকাশ মন্ডল ইরফান। কথা বলতে অপারগ সুকানি জুয়েল লিখে এ তথ্য জানান। এরপরই ইরফানকে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের সময় আকাশের কাছ থেকে একটি হ্যান্ড গ্লাভস, একটি ব্যাগ, ঘুমের ওষুধের খালি পাতা, নিহত ব্যক্তিদের ব্যবহৃত পাঁচটি ও আকাশের ব্যবহৃত দুটিসহ মোট সাতটি মোবাইল ফোন এবং বিভিন্ন জায়গায় রক্ত মাখানো নীল রঙের একটি জিনস প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় ওই জিনস প্যান্ট পরেছিলেন তিনি।গ্রেপ্তার আকাশ মন্ডল ইরফান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে বলেন, তিনি প্রায় আট মাস ধরে এই জাহাজে চাকরি করছেন। জাহাজের কর্মচারীরা ছুটি ও বেতন-বোনাস সময়মতো পেতেন না। বিভিন্ন ধরনের বিল কর্মচারীদের না দিয়ে জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া একাই ভোগ করতেন। এ ছাড়া জাহাজের মাস্টার কর্মচারীদের সঙ্গে রাগারাগি করতেন। কারও ওপর নাখোশ হলে তাঁকে জাহাজ থেকে নামিয়ে দিতেন। তাদের বকেয়া বেতনও দিতেন না। এসব নিয়ে তিনি মাস্টারের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তিনি তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সে অনুযায়ী ১৮ ডিসেম্বর আকাশ তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কিনে নিজের কাছে রেখে দেন। ২২ ডিসেম্বর সকাল আটটায় তাঁরা মোট ৯ জন জাহাজে ৭২০ টন ইউরিয়া সার নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। ওই রাতে খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে প্রথমে তিনি মাস্টারকে হত্যা করেন। পরে একে একে অন্যদের কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সব জাহাজ তাদের গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেলে আকাশ নিজে জাহাজ চালাতে থাকেন। জাহাজটি একপর্যায়ে ইশানবালা খালের মুখে মাঝিরচরে আটকা পড়ে। তিনি জাহাজটি নোঙর করে পাশ দিয়ে যাওয়া ট্রলারে বাজার করার কথা বলে উঠে পালিয়ে যান।
চাঁদপুরে জাহাজে ‘ডাকাতির’ ঘটনায় নিহত বেড়ে ৭চাঁদপুরে জাহাজে ‘ডাকাতির’ ঘটনায় নিহত বেড়ে ৭
সংবাদ সম্মেলনে মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, এমভি আল-বাখেরা জাহাজ থেকে গত সোমবার বেলা তিনটার পরে পাঁচজনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জাহাজের মালিক মাহবুব মুর্শেদ বাদী হয়ে চাঁদপুরের হাইমচর থানায় একটি মামলা করেন। তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় গতকাল রাতে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দেন।
জাহাজে ৭ খুনের ঘটনা পরিকল্পিত হত্যা দাবি স্বজনদেরজাহাজে ৭ খুনের ঘটনা পরিকল্পিত হত্যা দাবি স্বজনদের
র্যাব জানায়, তাঁকে হাইমচর থানায় হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে আগে কোনো মামলা নেই। তিনি মাদক সেবন করতেন না বলে র্যাবকে জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার ইরফানকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত এসব ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আজ দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লা নগরের শাকতলা এলাকায় র্যাব-১১-এর সিপিসি-২ কুমিল্লা কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিং করেন উপ–অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করা জাহাজটিতে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১১ ও র্যাব-৬ যৌথ অভিযান চালিয়ে বাগেরহাটের চিতলমারী থেকে আকাশকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকার জগদীশ মণ্ডলের ছেলে। তিনি জাহাজটিতে প্রায় ৮ মাস ধরে লস্কর পদে কর্মরত ছিলেন।
গতকাল মঙ্গলবার সাতজনকে খুনের ঘটনায় মামলা করেন জাহাজের মালিক মাহাবুব মুর্শেদ। মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা ডাকাত দলকে।গতকাল দায়ের করা মামলায় জানা যায়, ওই জাহাজে ৮ জন নন, ৯ জন ছিলেন। আর ওই ব্যক্তি হলেন আকাশ মন্ডল ইরফান। কথা বলতে অপারগ সুকানি জুয়েল লিখে এ তথ্য জানান। এরপরই ইরফানকে বাগেরহাট জেলার চিতলমারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের সময় আকাশের কাছ থেকে একটি হ্যান্ড গ্লাভস, একটি ব্যাগ, ঘুমের ওষুধের খালি পাতা, নিহত ব্যক্তিদের ব্যবহৃত পাঁচটি ও আকাশের ব্যবহৃত দুটিসহ মোট সাতটি মোবাইল ফোন এবং বিভিন্ন জায়গায় রক্ত মাখানো নীল রঙের একটি জিনস প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সময় ওই জিনস প্যান্ট পরেছিলেন তিনি।গ্রেপ্তার আকাশ মন্ডল ইরফান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে বলেন, তিনি প্রায় আট মাস ধরে এই জাহাজে চাকরি করছেন। জাহাজের কর্মচারীরা ছুটি ও বেতন-বোনাস সময়মতো পেতেন না। বিভিন্ন ধরনের বিল কর্মচারীদের না দিয়ে জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়া একাই ভোগ করতেন। এ ছাড়া জাহাজের মাস্টার কর্মচারীদের সঙ্গে রাগারাগি করতেন। কারও ওপর নাখোশ হলে তাঁকে জাহাজ থেকে নামিয়ে দিতেন। তাদের বকেয়া বেতনও দিতেন না। এসব নিয়ে তিনি মাস্টারের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তিনি তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সে অনুযায়ী ১৮ ডিসেম্বর আকাশ তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কিনে নিজের কাছে রেখে দেন। ২২ ডিসেম্বর সকাল আটটায় তাঁরা মোট ৯ জন জাহাজে ৭২০ টন ইউরিয়া সার নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। ওই রাতে খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে প্রথমে তিনি মাস্টারকে হত্যা করেন। পরে একে একে অন্যদের কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা করেন। সোমবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে সব জাহাজ তাদের গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেলে আকাশ নিজে জাহাজ চালাতে থাকেন। জাহাজটি একপর্যায়ে ইশানবালা খালের মুখে মাঝিরচরে আটকা পড়ে। তিনি জাহাজটি নোঙর করে পাশ দিয়ে যাওয়া ট্রলারে বাজার করার কথা বলে উঠে পালিয়ে যান।
চাঁদপুরে জাহাজে ‘ডাকাতির’ ঘটনায় নিহত বেড়ে ৭চাঁদপুরে জাহাজে ‘ডাকাতির’ ঘটনায় নিহত বেড়ে ৭
সংবাদ সম্মেলনে মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, এমভি আল-বাখেরা জাহাজ থেকে গত সোমবার বেলা তিনটার পরে পাঁচজনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আর তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জাহাজের মালিক মাহবুব মুর্শেদ বাদী হয়ে চাঁদপুরের হাইমচর থানায় একটি মামলা করেন। তথ্যপ্রযুক্তি সহায়তায় গতকাল রাতে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফানকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য দেন।
জাহাজে ৭ খুনের ঘটনা পরিকল্পিত হত্যা দাবি স্বজনদেরজাহাজে ৭ খুনের ঘটনা পরিকল্পিত হত্যা দাবি স্বজনদের
র্যাব জানায়, তাঁকে হাইমচর থানায় হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। তাঁর বিরুদ্ধে আগে কোনো মামলা নেই। তিনি মাদক সেবন করতেন না বলে র্যাবকে জানিয়েছেন।