গঙ্গা চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে কলকাতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল

আপলোড সময় : ০৩-০৩-২০২৫ ০৩:০৭:৫৩ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ০৩-০৩-২০২৫ ০৩:০৭:৫৩ অপরাহ্ন
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার গঙ্গা চুক্তি বিষয়ক যৌথ কমিটির বৈঠকে অংশ নিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল দেশটির পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় পৌঁছেছে।


সোমবার (৩ মার্চ) থেকে শুরু হতে যাওয়া পাঁচদিনের এই বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছেন। গঙ্গা-পদ্মা পানি বণ্টন চুক্তি ছাড়াও এই বৈঠকে তিস্তা এবং অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর বিষয়েও আলোচনা হতে পারে।

গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জেরে ঢাকা ও দিল্লির কূটনৈতিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে এই বৈঠকটিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।



কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, পাঁচ দিনের সফরে পশ্চিমবঙ্গে পৌঁছেছেন ইন্দো-বাংলাদেশ জয়েন্ট রিভার কমিশনের বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল। সোমবার মোট ১১ জন কর্মকর্তা এই সফরে অংশ নিতে এসেছেন। তাদের সঙ্গে নয়াদিল্লি থেকে আসা কেন্দ্রীয় পানিশক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে।

সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে— গঙ্গা-পদ্মা পানিবণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। প্রতিনিধি দলটি সোমবার ফারাক্কা ব্যারেজ পরিদর্শনে যাবেন। সেখানে তারা গঙ্গা থেকে পদ্মায় প্রবাহিত পানির পরিমাণ ও অবস্থা খতিয়ে দেখবেন। ফারাক্কা ব্যারেজ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নদীর পানি বণ্টনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গঙ্গা থেকে নির্ধারিত পরিমাণ পানি কী ভাবে পদ্মায় প্রবাহিত হচ্ছে, তা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করবেন দুই দেশের বিশেষজ্ঞরা।


এরপর ৭ মার্চ কলকাতায় একটি বিলাসবহুল হোটেলে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে দুই দেশের প্রতিনিধিরা আলোচনায় বসবেন। গঙ্গার পানিবণ্টন ছাড়াও তিস্তা এবং অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত নদীগুলোর বিষয়ে কথাবার্তা হতে পারে বলে বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি দীর্ঘ দিন ধরে আটকে রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গা-পদ্মা পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এর ফলে দুই দেশ গঙ্গার পানি ভাগ করে নেওয়ার একটি নির্দিষ্ট কাঠামো তৈরি করে। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালে এটির মেয়াদ শেষ হবে। আগামী বছর চুক্তির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে নতুন করে কিছু পর্যালোচনা ও সংশোধন আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চুক্তি অনুযায়ী, উভয় দেশ গঙ্গার প্রবাহ ও বণ্টন নিয়ে নিয়মিত বৈঠকে বসে। তবে বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ অভিযোগ করেছে যে— শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কা ব্যারেজ থেকে বাংলাদেশ পর্যাপ্ত পানি পায় না। অন্যদিকে, ভারতের দাবি— পানিপ্রবাহের স্বাভাবিক ওঠানামার কারণে কিছু সময় পানির পরিমাণ কমবেশি হয়। এই সফর ও বৈঠকের অংশ হিসেবে সেই বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা।

গত বছরের আগস্ট মাসে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। তাই এই বৈঠকের মাধ্যমে উভয় দেশ নিজেদের মতামত বিনিময় করবে এবং ভবিষ্যতে কী ভাবে পানিবণ্টন আরও কার্যকর ভাবে পরিচালনা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করে সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, ফারাক্কা পরিদর্শন এবং ৭ মার্চের আলোচনা আগামী বছরের জন্য পানিবণ্টন নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের এই সফর তাই শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের দিক থেকেই নয়, ভবিষ্যতের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।


Chairman & Managing Director : Nasir Uddin

Director News & Broadcast : Zeker Uddin Samrat

 __________________________________________________________

MyTv Bhaban, 155, 150/3, Hatirjheel, Dhaka-1219

Phone. ☎ +880255128896 ; Fax. +880255128899

Email. news@mytvbd.tv