এক দলে তিন জোড়া ভাই, এমন কিছু কি আর দেখবে টেস্ট ক্রিকেট

আপলোড সময় : ০৪-১১-২০২৪ ০৯:৪৮:১৭ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৪-১১-২০২৪ ০৯:৪৮:১৭ পূর্বাহ্ন
রবার্ট মুগাবে সরকার চড়াও হওয়ার আগে বিশ্ব ক্রিকেটের নতুন শক্তি হওয়ার পথেই ছিল জিম্বাবুয়ে। ১৯৯৭ থেকে ২০০২—এই পাঁচ বছরকে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের সোনালি সময় মনে করা হয়। সেই সোনালি সময়েই দলটি এমন এক ঘটনার জন্ম দিয়েছিল, যা অদূর ভবিষ্যতে তো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই আর ঘটবে কি না সন্দেহ।১৯৯৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া হারারে টেস্টে জিম্বাবুয়ের প্রতিপক্ষ ছিল নিউজিল্যান্ড। ২৭ বছর আগে সেই টেস্টের এই দিনে জিম্বাবুয়ের একাদশে ছিলেন তিন জোড়া ভাই—অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার ও গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার, পল স্ট্র্যাং ও ব্রায়ান স্ট্র্যাং এবং গেভিন রেনি ও জন রেনি।

ওই টেস্টে খেলেছেন ব্যাটিং অলরাউন্ডার গাই হুইটালও। তাঁর চাচাতো ভাই অ্যান্ডি হুইটাল ছিলেন দ্বাদশ খেলোয়াড়। ড্র হওয়া সেই টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি (১০৪ ও ১৫১) করেছিলেন ফ্লাওয়ার ভাইদের ছোটজন গ্র্যান্ট।  বুলাওয়েতে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টও হয়েছিল ড্র। সেই ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন গাই হুইটাল। তাঁর অপরাজিত ২০৩ রানের ইনিংস টেস্ট ইতিহাসে জিম্বাবুয়ের তৃতীয় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। টেস্টে নিজেদের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেটিই এখন পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের একমাত্র হার এড়ানো সিরিজ। ১৯৯৭ সালে সেই সিরিজের আগে-পরে ঘরের মাঠে খেলা আরও পাঁচটি সিরিজেই কিউইদের কাছে হেরেছে জিম্বাবুইয়ানরা।

ফ্লাওয়ার ভাইদের পরিচয় নতুন করে না দিলেও চলত। বিশ্ব ক্রিকেটে কিংবদন্তিতুল্য ভাইদের তালিকা করলে অ্যান্ডি ও গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার ওপরের সারিতেই থাকবেন। টেস্টে জিম্বাবুয়ের হয়ে যে চারজন ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন, অ্যান্ডি ও গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার তাঁদের দুজন। ৪৭৯৪ ও ৩৪৫৭ রান নিয়ে অ্যান্ডি ও গ্র্যান্টই জিম্বাবুয়ের টেস্ট ইতিহাসের শীর্ষ দুই রান সংগ্রাহক। ১৯৯৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে হারারে টেস্টে তাঁদের ২৬৯ রানের জুটি এখনো টেস্ট ইতিহাসে সহোদরদের জুটিতে সর্বোচ্চ।

ওয়ানডেতে ৬৭৮৬ রান নিয়ে অ্যান্ডি এখনো সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। আফ্রিকার দেশটির হয়ে টেস্ট সেঞ্চুরির করার দিক থেকেও অ্যান্ডি সবার ওপরে। ক্রিকেটের বনেদি সংস্করণে তাঁর সেঞ্চুরি সংখ্যা ১২টি, যেখানে জিম্বাবুয়ের হয়ে ৬টির বেশি সেঞ্চুরি তাঁর ছাড়া আর কারও নেই। ৫৬ বছর বয়সী অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার ও ৫৩ বছর বয়সী গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার বর্তমানে কোচিংয়ের সঙ্গে যুক্ত।


স্ট্র্যাং ভাইদের মধ্যে বড়জন পল খেলোয়াড়ি জীবনে ছিলেন মূলত লেগ স্পিনার। ব্যাটিংটাও মন্দ ছিল না। টেস্টের একই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ও ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়া একমাত্র জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটার তিনি। তাঁর চেয়ে প্রায় দুই বছরের ছোট ব্রায়ান ছিলেন বাঁহাতি পেসার। মুগাবে সরকার ক্রিকেটারদের ওপর চড়াও হওয়ার পরও হাতে গোনা যে কজন জিম্বাবুয়েতে টিকতে পেরেছিলেন, ব্রায়ান স্ট্র্যাং তাঁদের একজন। মাঝে মানসিক বিষণ্নতায় ভুগছিলেন ব্রায়ান। নিয়মিত যোগব্যায়াম করার মাধ্যমে পুরোপুরি সেরে ওঠেন। ফ্লাওয়ার ভাইদের মতো স্ট্র্যাং ভাইয়েরাও বর্তমানে কোচিংয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত।

রেনি ভাইদের মধ্যে বয়সে বড় জন রেনি ছিলেন ফাস্ট বোলার। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৪৪টি ওয়ানডে খেলার সুযোগ পেলেও টেস্ট ক্যারিয়ার খুব বেশি এগোয়নি। চার টেস্টের ক্যারিয়ারে ২৭ বছর আগে আজকের এই দিনে শুরু হওয়া ম্যাচটিই ছিল জিম্বাবুয়ের হয়ে এই সংস্করণে তাঁর শেষ ম্যাচ। জনের ছোট ভাই গেভিন রেনি খেলেছেন ২৩টি টেস্ট ও ৪০ ওয়ানডে। তিনি ছিলেন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।


১৯৯৭ সালের হারারে টেস্টের একাদশে থাকা গাই হুইটাল ২০০৩ বিশ্বকাপের পর জিম্বাবুয়ের হয়ে আর খেলতে পারেননি। ২০০০ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওভালে দেশটির প্রথম ফিল্ডার হিসেবে এক ওয়ানডে ম্যাচে চারটি ক্যাচ নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি। বন্য প্রাণীপ্রেমী সাবেক এই অলরাউন্ডার গত এপ্রিলে চিতা বাঘের কামড়ে গুরুতর আহত হন।

দুই ভাই নয়, বাবার পথে হেঁটে জিম্বাবুয়ের হয়ে খেলবেন বেন কারেন
ওই টেস্টের দ্বাদশ খেলোয়াড় ছিলেন গাই হুইটালের চাচাতো ভাই অ্যান্ডি হুইটাল। জিম্বাবুয়ের হয়ে ১০টি টেস্ট ও ৬৩টি ওয়ানডে খেলা অ্যান্ডির আরেকটি পরিচয় আছে। তিনি জগদ্বিখ্যাত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমানে অ্যান্ডি ইংল্যান্ডের কেন্টের একটি স্কুলের আবাসিক শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। একই সঙ্গে গণিত বিষয়ে পড়ান ও স্কুলের ক্রিকেট দলকে কোচিং করান।

 


অফিস :

MyTv Bhaban, 155, 150/3, Hatirjheel, Dhaka-1219

Phone. ☎ +880255128896 ; Fax. +880255128899

Email. admin@mytvbd.tv