আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগের খবর কি?

আপলোড সময় : ১৪-০৩-২০২৫ ০৩:৩৮:০৮ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৪-০৩-২০২৫ ০৩:৩৮:০৮ অপরাহ্ন
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আবাসিক খাতে গ্যাসের নতুন সংযোগ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৩ সালে একবার উদ্যোগ গ্রহণ করা হলেও ২০২১ সালে পুরোপুরিভাবে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকারের জ্বালানি বিভাগ। বিগত সরকারের আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধের এ সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয় আলোচনা-সমালোচনা, ক্ষোভ সৃষ্টি হয় জনমনেও।তবে জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে বিষয়টি বিবেচনার প্রত্যাশা করছেন অনেকেই। তবে সে প্রত্যাশার পূরণের সম্ভাবনা কতটুকু, সে প্রশ্নও রয়ে গেছে।




সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশের মোট গ্যাসের ১২ শতাংশ ব্যবহার হয় আবাসিক খাতে। বাকি অংশ শিল্প, সার, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য খাতে ব্যবহৃত হয়। বৈধ উপায়ে গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকলেও অসংখ্য গ্রাহক অবৈধ উপায়ে গ্যাস ব্যবহার করেছে, যার ফলে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত বিতরণ কোম্পানিগুলো।তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নে প্রায় প্রতিনিয়ত অভিযান চালানো হয়। আর বর্তমানে তিতাসের বৈধ গ্রাহকের সংখ্যা ২৮ লাখের বেশি। 



তিতাস আরও জানিয়েছে, বৈধ সংযোগ বন্ধ থাকায় বেড়েছে অবৈধ সংযোগ। ফলে বিগত সরকারের সময় তারা অবৈধ সংযোগ ও আর্থিক লোকসান কমাতে নতুন সংযোগ কিংবা বার্নার বর্ধিত করার প্রস্তাব দেন। সেসময় জ্বালানি বিভাগের সচিবরা এ বিষয়ে কাজ করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেননি। অভিযোগ রয়েছে, এলপিজি ব্যবসায়ীরা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রভাবিত করে নতুন সংযোগ বা বার্নার বর্ধিতকরণের বিষয়টি বন্ধ রাখে।


২০২১ সালে গ্যাস সংযোগ বন্ধের সিদ্ধান্তের আগ পর্যন্ত ৫৬ হাজার গ্রাহক নতুন গ্যাস সংযোগের জন্য ডিমান্ড নোটের টাকা জমা প্রদান করেন। যেহেতু নতুন সংযোগ আর দেওয়া হবে না, তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ডিমান্ড নোট ইস্যু করা গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। সেসময় তিতাস গ্যাস টাকা ফেরত দিতে একটি কমিটি গঠন করেছিল। তবে গত বছর পর্যন্তও তারা গ্রাহকের জমা করা টাকা ফেরত দিতে পারেনি।



আবাসিক বাসা-বাড়িতে গ্যাস সংযোগের ক্ষেত্রে বিগত সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থানও বেশ স্পষ্ট দেখা গেছে। দেশীয় খাতে গ্যাসের পরিমাণ যথেষ্ট না থাকায় আবাসিকে নতুন গ্যাসের সংযোগ দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) এস এম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ।

তিনি গনমাধ্যমকে বলেন, আবাসিকে গ্যাস সংযোগ চালু করার কোনো সম্ভাবনা নেই। তার মূল কারণ গ্যাস সংকট। দেশে এখন চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত গ্যাস নেই, আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হচ্ছে। শুধুমাত্র ইপিজেডভিত্তিক শিল্পকারখানায় প্রায়োরিটি অনুযায়ী নতুনভাবে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে। কিছুদিন আগেই শিল্পে গ্যাসের দাম নিয়ে বিইআরসি গণশুনানি করেছে। সেটার সিদ্ধান্ত আমাদের হাতে এলেই শিল্পে গ্যাস সংযোগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু আবাসিকে গ্যাস দেওয়া সম্ভব নয়।

একই কথা জানালেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. আব্দুল মান্নান পাটোয়ারি। তিনি গনমাধ্যমকে  বলেন, আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বা পরিকল্পনা এখনো নেই।



সম্প্রতি এক ব্রিফিংয়ে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেছেন, বাসাবাড়িতে এই মুহূর্তে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা চাহিদার তুলনায় গ্যাস পাচ্ছি না। প্রয়োজনে আমদানি করতে হচ্ছে, যার ফলে প্রচুর ডলার খরচ হয়। তাই এ মুহূর্তে বাসাবাড়িতে গ্যাস দেওয়ার কথা বললে তা মিথ্যা আশ্বাস হবে। তবে যদি বড় কোনো গ্যাসের মজুত আবিষ্কৃত হয়, তাহলে পরবর্তীতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

এ প্রসঙ্গে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ইজাজ হোসেন গনমাধ্যমকে  বলেন, আবাসিকে নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। কারণ দেশে পর্যাপ্ত গ্যাস নেই। আমদানি করা এলএনজি দিয়ে তো আবাসিকের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। কারণ, তার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর গ্যাস দরকার রয়েছে। যতদিন পর্যন্ত গ্যাসখাতে কোনো পরিবর্তন না আসবে, ততদিন এলপিজি বা বায়োগ্যাসের মাধ্যমেই গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে হবে।


অফিস :

MyTv Bhaban, 155, 150/3, Hatirjheel, Dhaka-1219

Phone. ☎ +880255128896 ; Fax. +880255128899

Email. admin@mytvbd.tv