
যুক্তরাষ্ট্রে ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক এড়াতে ভারত থেকে কার্গো ফ্লাইটে যুক্তরাষ্ট্রে আইফোন পাঠাচ্ছে অ্যাপল। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানায়।প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত ভারতীয় উৎপাদন কেন্দ্র থেকে প্রায় ৬০০ মেট্রিক টন আইফোন (প্রায় ১৫ লাখ ইউনিট) এয়ারকার্গো করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে, ট্রাম্প প্রশাসন ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ২৬% শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেও ৯০ দিনের জন্য তা স্থগিত রয়েছে। তবে, চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ১২৫% শুল্ক কার্যকর করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে অ্যাপলের বেশিরভাগ আইফোন অ্যাসেম্বল হয়।এক সুত্রে জানা গেছে, অ্যাপল এই শুল্ক আরোপের পূর্বেই পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাইছে। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির আওতায় ভারতের পণ্যে ১০% শুল্ক দিতে হবে, যা চীনের তুলনায় অনেক কম। এই সুবিধা কাজে লাগাতেই ভারতীয় উৎপাদন বাড়িয়ে দ্রুত পরিবহনের উদ্যোগ নিয়েছে অ্যাপল।চীনের কয়েকটি বিমানবন্দরে অ্যাপল যে মডেল অনুসরণ করে, তারই আদলে চেন্নাইয়ের ওই বিমানবন্দরে ‘গ্রিন করিডোর’ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে বলে জানা যায়।
সূত্র মতে, শুল্ক কার্যকর হওয়ার পূর্বেই অ্যাপল তাদের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। এ লক্ষ্যে ভারতের চেন্নাই বিমানবন্দরে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের সময় ৩০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৬ ঘণ্টায় নামিয়ে আনার জন্য স্থানীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও করে অ্যাপল।বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে চীন থেকে আমদানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপের পর আইফোনের দাম বেড়ে যেতে পারে।ইউবিএস ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের অনুমান অনুযায়ী, ২৫৬ জিবি স্টোরেজসহ একটি আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের দাম ১,১৯৯ ডলার (৯২৫ পাউন্ড) থেকে বেড়ে ২,০০০ ডলারের কাছাকাছি হতে পারে—যা আগের দামের তুলনায় ৬০% বৃদ্ধি পাবে—যদি অ্যাপল শুল্কের একটি বড় অংশ ক্রেতাদের ওপর চাপিয়ে দেয়।
এদিকে, ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে যে অ্যাপল ভারতে অবস্থিত আইফোন কারখানাগুলোতে উৎপাদন ২০% বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। চেন্নাইয়ের বৃহত্তম ফক্সকন কারখানায় কর্মী সংখ্যা বাড়ানো এবং অস্থায়ীভাবে উৎপাদন চালু রাখার মাধ্যমে এই লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা চলছে।গত বছর, চেন্নাই কারখানায় ২০ মিলিয়ন আইফোন উৎপাদিত হয়েছে, যার মধ্যে সর্বশেষ আইফোন ১৫ এবং ১৬ মডেল রয়েছে। টেক জায়ান্ট অ্যাপলের ভারতে ফক্সকন ও টাটা পরিচালিত তিনটি কারখানা রয়েছে।ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এই সপ্তাহে জানিয়েছে যে অ্যাপল চীন থেকে শুল্ক মুক্তির চেষ্টা করার সময় ‘অস্থায়ী সমাধান’ হিসেবে ভারতে তৈরি আরও আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।ব্যাংক অফ আমেরিকার বিশ্লেষক ওয়ামসি মোহানের মতে, যদি অ্যাপল ভারতে তৈরি সমস্ত আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করে, তাহলে তা এ বছরে মার্কিন ক্রেতাদের চাহিদার প্রায় ৫০% পূরণ করবে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে আইফোনের উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হবে, কারণ সেখানে লক্ষাধিক শ্রমিকের বেতন ও অন্যান্য খরচ অনেক বেশি।ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের প্রযুক্তি গবেষণা প্রধান ড্যান আইভস সতর্ক করেছেন যে, যদি আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করা হয়, তাহলে এর দাম বেড়ে হতে পারে প্রায় ৩৫০০ ডলার (বর্তমান দাম ১০০০ ডলার)।এর আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ‘লিবারেশন ডে’ ভাষণে দাবি করেছেন যে তার গৃহীত বৈশ্বিক ট্যারিফ নীতির ফলে চাকরি বাজার বৃদ্ধি এবং কারখানাগুলোতে উৎপাদন বাড়বে। তবে, এই নীতির ফলে পোশাক থেকে ইলেকট্রনিক্স পণ্য পর্যন্ত আমদানিকৃত পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে, যা আমেরিকান ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের প্রযুক্তি গবেষণা প্রধান ড্যান আইভস বলেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা একটি ‘কাল্পনিক গল্প’ ছাড়া আর কিছুই নয়। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, প্রেসিডেন্টের এই নীতি ‘বোকামি’ ছাড়া আর কিছুই নয়।
কেন দাম বাড়বে?
এশিয়ায় আইফোনের উৎপাদন ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল এবং সাশ্রয়ী।
যুক্তরাষ্ট্রে এই পুরো সাপ্লাই চেইন স্থানান্তর করতে ৩০ বিলিয়ন ডলার এবং অন্তত ৩ বছর সময় লাগবে (মাত্র ১০% উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য)।
ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া বা নিউ জার্সিতে ফ্যাব্রিকেশন প্ল্যান্ট তৈরি করলেও খরচ বহুগুণ বেড়ে যাবে।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই নীতির মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং সংক্রান্ত চাকরির বাজার আমেরিকায় ফিরবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এশিয়ার তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে শ্রম ও উৎপাদন খরচ অনেক বেশি, যা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে। আইভসের ভাষায়, ‘এটি একটি অর্থনৈতিক স্বপ্নমাত্র, যা বাস্তবে রূপান্তর করা কঠিন’।
ইতোমধ্যে, ট্রাম্প প্রশাসন ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ২৬% শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেও ৯০ দিনের জন্য তা স্থগিত রয়েছে। তবে, চীন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ১২৫% শুল্ক কার্যকর করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে অ্যাপলের বেশিরভাগ আইফোন অ্যাসেম্বল হয়।এক সুত্রে জানা গেছে, অ্যাপল এই শুল্ক আরোপের পূর্বেই পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে চাইছে। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির আওতায় ভারতের পণ্যে ১০% শুল্ক দিতে হবে, যা চীনের তুলনায় অনেক কম। এই সুবিধা কাজে লাগাতেই ভারতীয় উৎপাদন বাড়িয়ে দ্রুত পরিবহনের উদ্যোগ নিয়েছে অ্যাপল।চীনের কয়েকটি বিমানবন্দরে অ্যাপল যে মডেল অনুসরণ করে, তারই আদলে চেন্নাইয়ের ওই বিমানবন্দরে ‘গ্রিন করিডোর’ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে বলে জানা যায়।
সূত্র মতে, শুল্ক কার্যকর হওয়ার পূর্বেই অ্যাপল তাদের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। এ লক্ষ্যে ভারতের চেন্নাই বিমানবন্দরে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের সময় ৩০ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৬ ঘণ্টায় নামিয়ে আনার জন্য স্থানীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও করে অ্যাপল।বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে চীন থেকে আমদানির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপের পর আইফোনের দাম বেড়ে যেতে পারে।ইউবিএস ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের অনুমান অনুযায়ী, ২৫৬ জিবি স্টোরেজসহ একটি আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্সের দাম ১,১৯৯ ডলার (৯২৫ পাউন্ড) থেকে বেড়ে ২,০০০ ডলারের কাছাকাছি হতে পারে—যা আগের দামের তুলনায় ৬০% বৃদ্ধি পাবে—যদি অ্যাপল শুল্কের একটি বড় অংশ ক্রেতাদের ওপর চাপিয়ে দেয়।
এদিকে, ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে যে অ্যাপল ভারতে অবস্থিত আইফোন কারখানাগুলোতে উৎপাদন ২০% বাড়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। চেন্নাইয়ের বৃহত্তম ফক্সকন কারখানায় কর্মী সংখ্যা বাড়ানো এবং অস্থায়ীভাবে উৎপাদন চালু রাখার মাধ্যমে এই লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা চলছে।গত বছর, চেন্নাই কারখানায় ২০ মিলিয়ন আইফোন উৎপাদিত হয়েছে, যার মধ্যে সর্বশেষ আইফোন ১৫ এবং ১৬ মডেল রয়েছে। টেক জায়ান্ট অ্যাপলের ভারতে ফক্সকন ও টাটা পরিচালিত তিনটি কারখানা রয়েছে।ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এই সপ্তাহে জানিয়েছে যে অ্যাপল চীন থেকে শুল্ক মুক্তির চেষ্টা করার সময় ‘অস্থায়ী সমাধান’ হিসেবে ভারতে তৈরি আরও আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।ব্যাংক অফ আমেরিকার বিশ্লেষক ওয়ামসি মোহানের মতে, যদি অ্যাপল ভারতে তৈরি সমস্ত আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করে, তাহলে তা এ বছরে মার্কিন ক্রেতাদের চাহিদার প্রায় ৫০% পূরণ করবে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন যে আইফোনের উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তর করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হবে, কারণ সেখানে লক্ষাধিক শ্রমিকের বেতন ও অন্যান্য খরচ অনেক বেশি।ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের প্রযুক্তি গবেষণা প্রধান ড্যান আইভস সতর্ক করেছেন যে, যদি আইফোন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করা হয়, তাহলে এর দাম বেড়ে হতে পারে প্রায় ৩৫০০ ডলার (বর্তমান দাম ১০০০ ডলার)।এর আগে, ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ‘লিবারেশন ডে’ ভাষণে দাবি করেছেন যে তার গৃহীত বৈশ্বিক ট্যারিফ নীতির ফলে চাকরি বাজার বৃদ্ধি এবং কারখানাগুলোতে উৎপাদন বাড়বে। তবে, এই নীতির ফলে পোশাক থেকে ইলেকট্রনিক্স পণ্য পর্যন্ত আমদানিকৃত পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে, যা আমেরিকান ভোক্তাদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের প্রযুক্তি গবেষণা প্রধান ড্যান আইভস বলেন, ট্রাম্পের এই পরিকল্পনা একটি ‘কাল্পনিক গল্প’ ছাড়া আর কিছুই নয়। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, প্রেসিডেন্টের এই নীতি ‘বোকামি’ ছাড়া আর কিছুই নয়।
কেন দাম বাড়বে?
এশিয়ায় আইফোনের উৎপাদন ব্যবস্থা অত্যন্ত জটিল এবং সাশ্রয়ী।
যুক্তরাষ্ট্রে এই পুরো সাপ্লাই চেইন স্থানান্তর করতে ৩০ বিলিয়ন ডলার এবং অন্তত ৩ বছর সময় লাগবে (মাত্র ১০% উৎপাদন স্থানান্তরের জন্য)।
ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া বা নিউ জার্সিতে ফ্যাব্রিকেশন প্ল্যান্ট তৈরি করলেও খরচ বহুগুণ বেড়ে যাবে।
তবে ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, এই নীতির মাধ্যমে ইলেকট্রনিক্স ম্যানুফ্যাকচারিং সংক্রান্ত চাকরির বাজার আমেরিকায় ফিরবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এশিয়ার তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে শ্রম ও উৎপাদন খরচ অনেক বেশি, যা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে। আইভসের ভাষায়, ‘এটি একটি অর্থনৈতিক স্বপ্নমাত্র, যা বাস্তবে রূপান্তর করা কঠিন’।