চীনের অবিবাহিতরা কেন বাংলাদেশি মেয়েদের বিয়ে করছে, পেছনে ভয়াবহ গল্প

আপলোড সময় : ২৭-০৫-২০২৫ ০৫:৩২:১৩ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৭-০৫-২০২৫ ০৫:৩২:১৩ অপরাহ্ন
বাংলাদেশি নারীদের বিয়ে না করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাস। গত রোববার (২৫ মে) এক সতর্ক বার্তায় তারা জানায়, বাংলাদেশি নারীকে বিয়ে করলে প্রতারণার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই বিয়েকে চীনা দূতাবাস ‘বিদেশি বউ কেনা’ হিসেবে অভিহিত করেছে। বিষয়টি প্রথমে যে কেউ হাস্যরস হিসেবে নেবে। তবে এর পেছনে লুকিয়ে আছে ভয়াবহ এক গল্প।

মঙ্গলবার (২৭ মে) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনের অবিবাহিত পুরুষরা বাংলাদেশ, মিয়ানমার, নেপালসহ আরও কয়েকটি দেশের নারীদের বিয়ে করছে। বিশেষ করে চীনের প্রত্যন্ত গ্রামের পুরুষরা, কারণ দেশটিতে নারীর তুলনায় পুরুষের সংখ্যা অনেক বেশি।

১৯৮০ সালের দিকে চীনে ভ্রুণ হত্যার হার চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছায়। সেই সময় বহু কন্যা শিশু জন্মের আগেই হত্যা করা হয়। ফলে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে মেয়েদের সংখ্যা কমে যায়। যারা সেই সময় জন্ম নিয়েছিল, এখন তারা বিয়ের উপযোগী হয়েছে। কিন্তু মেয়ে কম থাকায় বিয়ের জন্য তারা ভিনদেশি ‘বউ কিনছে’।

বিভিন্ন সূত্র জানায়, ২০২০ সাল থেকে ২০৫০ সাল পর্যন্ত চীনের প্রায় ৫ কোটি পুরুষ বিয়ে করতে পারবে না। এমন পরিস্থিতিতে মেয়েদের বিয়ের বয়স কমানোর দাবিও উঠেছে দেশটিতে।

লুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মিং গাও বলেন, “প্রত্যন্ত ও গ্রামীণ এলাকায় বিয়ের চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে, অবৈধ বিয়ের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। প্রতিবেশী দেশ থেকে শিশু ও মেয়েদের পাচার করে এনে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”

এই পাচারের অন্যতম টার্গেট এখন বাংলাদেশ ও নেপাল। পাচারকারীরা দরিদ্র পরিবারগুলোর মেয়েদের টার্গেট করছে। বিশেষ করে যারা গ্রামে বাস করে। তাদের স্বপ্ন দেখানো হয় ভালো কাজ ও উন্নত ভবিষ্যতের।

কিন্তু চীনে পৌঁছানোর পর ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। মেয়েদের কাগজপত্র কেড়ে নেওয়া হয়। তাদের চলাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এরপর ৫ হাজার থেকে ২০ হাজার ডলারে বিক্রি করা হয় চীনের অবিবাহিত পুরুষদের কাছে। বয়স ও সৌন্দর্যের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয় মূল্য।

এই ‘বিক্রি’কে বলা হয় বিয়ে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেয়েদের কোনো সম্মতি থাকে না। যারা পাচার হয়, তাদের জোরপূর্বক বিয়ে দিয়ে আটকে রাখা হয়। এমনকি সন্তান নিতে চাপও দেওয়া হয়।

মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ২০১৯ সালেই মিয়ানমারের নারীদের পাচারের ঘটনা তুলে ধরেছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ ও নেপালেও ছড়িয়ে পড়েছে এই পাচারকারীদের জাল। চীনা কৃষক ও শ্রমিকদের কাছে কম দামে ‘ভিনদেশি বউ’ পাইয়ে দেওয়ার নামে চলছে এই মানবপাচার। যারা পালাতে চায়, তাদের আটক করে শাস্তি দেওয়া হয় ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে।


অফিস :

MyTv Bhaban, 155, 150/3, Hatirjheel, Dhaka-1219

Phone. ☎ +880255128896 ; Fax. +880255128899

Email. admin@mytvbd.tv