আসামে সরকারি স্কুলের শিক্ষককে বাংলাদেশে পুশ ইন করল ভারত

আপলোড সময় : ২৯-০৫-২০২৫ ০৭:১৫:১৪ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ২৯-০৫-২০২৫ ০৭:১৫:১৪ অপরাহ্ন
ভারতের সুপ্রিম কোর্টে নাগরিকত্ব নিয়ে মামলা বিচারাধীন থাকা সত্ত্বেও আসামের এক সাবেক সরকারি স্কুলশিক্ষককে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁর পরিবার। খায়রুল ইসলাম নামের ওই ৫১ বছর বয়সী শিক্ষককে ‘বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে পুশ ব্যাক করা হয়েছে বলে দাবি করেন তাঁর স্ত্রী রীতা খানম ও কন্যা আফরিন।

ঘটনার প্রতিবাদে আসামের বিরোধী রাজনৈতিক দল অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) বুধবার (২৮ মে) রাজ্যপাল লক্ষ্মণ প্রসাদ আচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে পুশ ব্যাকের এই নীতিকে ‘অমানবিক’ আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা বন্ধের দাবি জানিয়েছে।

এআইইউডিএফ বিধায়ক আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তাঁর নির্বাচনী এলাকা থেকে সন্দেহভাজন বাংলাদেশি হিসেবে গ্রেপ্তার ১৪ জনকে সীমান্ত পেরিয়ে পাঠানো হলেও বাংলাদেশ তাঁদের গ্রহণ করেনি। ফলে তাঁরা নো ম্যানস ল্যান্ডে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

খায়রুল ইসলামের বিষয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল তাঁকে বিদেশি ঘোষণা করে। তিনি ওই রায়ের বিরুদ্ধে গুয়াহাটি হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১৮ সালে হাইকোর্ট ট্রাইব্যুনালের রায় বহাল রাখে। এরপর তিনি সুপ্রিম কোর্টে যান, যেখানে মামলাটি এখনো বিচারাধীন।

২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্ট এক আদেশে বলেন, বিদেশি মামলায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে আটক ব্যক্তিদের জামিনে মুক্তি দিতে হবে। সেই রায়ের পর জামিনে মুক্ত হন খায়রুল ইসলাম।

তাঁর আইনজীবী অভিজিৎ রায় বলেন, মামলাটি এখনো সুপ্রিম কোর্টে চলমান। সর্বশেষ শুনানি হয়েছে ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর। এরপর কোনো রায় হয়নি। তাঁর দাবি, “মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগে খায়রুলকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো শুধু বেআইনি নয়, এটি অসাংবিধানিকও।”

খায়রুলের স্ত্রী ও কন্যা জানান, ২৩ মে পুলিশ তাঁদের বাড়ি থেকে খায়রুলকে আটক করে মাটিয়া ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পরে ২৭ মে চোখ ও হাত বেঁধে তাঁকে একটি বাসে করে সীমান্তে পাঠানো হয়।

খায়রুলের অবস্থান সম্পর্কে তাঁরা জানতে পারেন ২৭ মে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও থেকে। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, খায়রুল নিজেকে আসামের মরিগাঁও জেলার খান্দা পুখুরি গ্রামের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। তাঁর অবস্থান বাংলাদেশে কুড়িগ্রামের বড়াইবাড়ি সীমান্ত এলাকায়।

এ বিষয়ে বিএসএফ, রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে, মঙ্গলবার বিএসএফ একটি বিবৃতিতে জানায়, ২৭ মে আসামের দক্ষিণ সালমারা-মানকাচর সীমান্তে কিছু বাংলাদেশি ভারতে ঢোকার চেষ্টা করলে বিএসএফ বাধা দেয়। তবে ওই বিবৃতিতে খায়রুলের নাম বা তাঁর অবস্থান উল্লেখ করা হয়নি।

দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পেহেলগামের ঘটনার পর রাজধানী ও আশপাশের এলাকা থেকে ৪৭০ জনকে ‘বাংলাদেশি’ চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানো হয়েছে। গত ছয় মাসে মোট ৭৭০ জনকে একইভাবে সীমান্তে পাঠানো হয়েছে।


অফিস :

MyTv Bhaban, 155, 150/3, Hatirjheel, Dhaka-1219

Phone. ☎ +880255128896 ; Fax. +880255128899

Email. admin@mytvbd.tv