
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শনিবার (২৮ জুন) হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রধানমন্ত্রী পায়েতংগার্ন শিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। সম্প্রতি কম্বোডিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে পায়েতংগার্নের একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর থেকেই জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
১৫ জুন ফাঁস হওয়া ওই কথোপকথনে পায়েতংগার্ন হুন সেনকে থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনীর একজন জেনারেল সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করে বলেন, ওই জেনারেল “শুধু নিজেকে শক্তিশালী দেখাতে চান” এবং কম্বোডিয়ার কথায় গুরুত্ব দেন না। জানা গেছে, এই জেনারেলই ২৮ মে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া সীমান্তে সংঘটিত এক সংঘর্ষের সময় দায়িত্বে ছিলেন, যেখানে এক কম্বোডিয়ান সৈন্য নিহত হন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার ব্যাংককের ভিক্টরি মনুমেন্ট এলাকায় জাতীয় পতাকা ও প্ল্যাকার্ড হাতে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা। একটি বিশাল মঞ্চে বক্তারা সীমান্ত উত্তেজনা প্রসঙ্গে থাইল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বার্থের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এবং তাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় থাইল্যান্ডে একাধিক তদন্ত শুরু হয়েছে, যা প্রধানমন্ত্রী পায়েতংগার্নের অবস্থান আরও দুর্বল করে তুলেছে। এমনিতেই তার সরকার অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক বিভাজনের মুখোমুখি। নতুন এই বিতর্ক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
পায়েতংগার্ন শিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের প্রভাবশালী শিনাওয়াত্রা পরিবারের সদস্য। তবে এই ঘটনা তার রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে, ফোনালাপে নাম আসার পরও হুন সেন এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। বর্তমানে তিনি কম্বোডিয়ার সেনেট প্রেসিডেন্ট হলেও তার রাজনৈতিক প্রভাব অনেক। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনার কারণে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি হতে পারে।
বিক্ষোভকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, পায়েতংগার্ন পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। এখন সরকার কীভাবে এই রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা করে, সেটাই দেখার বিষয়।