
দীর্ঘ ৫০ বছর পর আবারও চাঁদে মানুষ পাঠানোর অভিযান শুরু করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই চাঁদকে ঘিরে ১০ দিনের অভিযানে নভোচারী পাঠানোর আশা করছে নাসা।এর আগে নাসা জানিয়েছিল ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে চাঁদে মানুষ পাঠাবে তারা। তবে সেই অভিযান এখন এগিয়ে আনা হয়েছে বলে নাসা জানিয়েছে।‘আর্টেমিস ২’ নামের এই অভিযানে চারজন নভোচারীকে চাঁদে পাঠানো হবে এবং সিস্টেম পরীক্ষা করে দেখার জন্য ১০ দিন পর তাদেরকে আবার ফেরত আনা হবে।নাসার ভারপ্রাপ্ত উপ সহযোগী প্রশাসক লাকিসা হকিন্স বলেছেন, কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে পাঁচ ফেব্রুয়ারিতেই অভিযান শুরু করা হতে পারে। তবে আমরা নিরাপত্তার বিষয়টিতেই সবচেয়ে বেশি জোর দিতে চাই। এটি আমাদের শীর্ষ অগ্রাধিকারের বিষয়।
১৯৭২ সালের অ্যাপোলো ১৭ অভিযানের পরে এটিই হবে চাঁদে মানুষ পাঠানোর প্রথম অভিযান; আর নাসার আর্টেমিস প্রোগামের দ্বিতীয় অভিযান।নাসার প্রথম আর্টেমিস মিশন ২৫ দিন স্থায়ী হয়েছিল। ২০২২ সালের নভেম্বরের এই অভিযানে মানুষ ছাড়াই মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ সম্পন্ন করা হয় সফলভাবে। সেই মিশনে মহাকাশযান চাঁদের চারপাশে ভ্রমণ করেছিল এবং পরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশ করেছিল।এবার 'আর্টেমিস ২' মিশনে চার নভোচারী চাঁদ পর্যন্ত দশ দিনের ট্রিপে যাবেন এবং ফিরে আসবেন। এই নভোচারীরা হলেন: রিড ওয়াইজমান, ভিক্টর গ্লোভার, ক্রিস্টিনা কচ এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সির জেরেমি হ্যানসেন।
তারা চাঁদে অবতরণ করবেন না, তবে ১৯৭২ সালের অ্যাপোলো ১৭-এর পর প্রথমবারের মতো নিম্ন-পৃথিবীর কক্ষপথের বাইরে ভ্রমণকারী নভোচারী হবেন।নাসার আর্টেমিস মিশনের প্রস্তুতি চলেছে বহুদিন ধরে। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৪,০০০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ। তৈরি করা হয়েছে এযাবৎ কালের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী রকেট এসএলএক্স। এই রকেটেই চাঁদে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্য তাদের।এই দৌড়ে নাসা এখন একা নয়, প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছে আরও কিছু দেশ যার মধ্যে আছে- চীন, ভারত ও ইসরায়েল। চীনা রোবট চাঁদে অবতরণও করেছে। চাঁদকে ঘিরে এই প্রতিযোগিতা নাসার আর্টেমিস মিশনের পেছনে একটা কারণ হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করেন বিজ্ঞোনীদের কেউ কেউ।
আবার গত ২০ বছর ধরে চাঁদে নাকি মঙ্গলে যাওয়া হবে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিতর্ক চলেছে। তবে মঙ্গলে যাওয়ার পরিকল্পনা খুবই ব্যয়বহুল হওয়ায় চন্দ্রাভিযানকেই শেষমেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।