
বগুড়ার ধুনটে গ্রাম্য সালিশে বিচার মনঃপূত না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষুব্ধ হয়ে রহমত আলী তালুকদার (৪৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এ ব্যাপারে নিহতের স্ত্রী শুক্রবার রাতে ধুনট থানায় ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ রাতেই দুজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম জানান, এক গৃহবধূর ঘরে ঢোকায় ওই ব্যক্তিকে স্বজনরা মারধর করে। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এজাহারে সালিশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলা ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রহমত আলী ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের প্রয়াত ফরহাদ হোসেনের ছেলে। তিনি গোবিন্দপুর বাজারে ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর ব্যবসা করতেন। পাশাপাশি তিনি গ্রামে সামাজিক বিরোধও মীমাংসা করতেন। একই গ্রামের মৃত আবদুল জোব্বারের ছেলে জুয়েল শেখের সঙ্গে জমি নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরোধ হয়। এ ঘটনার সালিশ বৈঠক করেন রহমত আলী। কিন্তু বৈঠকে রায় জুয়েল শেখের বিপক্ষে গেলে তিনি ও তার পরিবারের লোকজন রহমত আলীর ওপর ক্ষিপ্ত হন। বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে তিনি (রহমত আলী) ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে জুয়েল শেখের বাড়ির সামনে পৌঁছালে জুয়েল ও তার লোকজন তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে রাতেই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে রহমত আলীকে হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী কোহিনুর খাতুন শুক্রবার রাতে ধুনট থানায় জুয়েল, তার মা রুবি খাতুনসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা ও ধুনট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হায়দার আলী জানান, এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সালিশে ন্যায়বিচার না করা নিয়ে বিরোধে রহমতকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রাতেই এজাহারনামীয় আসামি মোহাম্মদ আলী মহররম ও আবু শামাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
তবে ধুনট থানার ওসি জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নিহত রহমত ঘটনার রাতে অসৎ উদ্দেশ্যে জুয়েলের মা রুবি খাতুনের ঘরে ঢুকেছিলেন। এ সময় তার স্বজনরা রহমতকে আটক করে মারধর করে। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান। এরপরও অভিযোগের তদন্ত চলছে।