গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে পতন হয় তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ৮ আগস্ট বাংলাদেশে গঠন হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।কিন্তু এই সরকারের মেয়াদ কত দিন হবে, তা নিয়ে সর্বত্র চলছে জল্পনা। এবার কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল–জাজিরার সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ চার বছরের কম হবে। এটা আরও কম হতে পারে।”
সম্প্রতি আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের (কপ২৯) ফাঁকে আল–জাজিরাকে এই সাক্ষাৎকার দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার সেই ভিডিও সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করা হয়।সাক্ষাৎকারে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ যেসব সংকট মোকাবিলা করছে, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে চলমান সংস্কারপ্রক্রিয়া, আগামী নির্বাচন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের সঠিক সময় কখন হবে, সে বিষয়ে ড. ইউনূসের কোনও ভাবনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “না। আমার মাথায় এমন কিছু নেই।”
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় সীমা কী হতে পারে, সে বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা স্থায়ী সরকার নই। নিয়মিত সরকার পাঁচ বছরের হয়। নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ সম্ভবত চার বছর হতে পারে। কারণ, মানুষ সরকারের মেয়াদ কম চায়। সুতরাং এটা (অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ) চার বছরের কম হওয়া উচিত, এটা নিশ্চিত। এটা আরও কম হতে পারে। এটা পুরোটা নির্ভর করছে মানুষ কী চায়, রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার ওপরে।”তিনি আরও বলেন, “যদি রাজনৈতিক দলগুলো চায় এটা (সংস্কার) ভুলে যাও, নির্বাচন দাও। তাহলে সেটা করা হবে।”তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি চার বছর থাকছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমি তা বলিনি যে চার বছর। আমি বলেছি, এটা সর্বোচ্চ মেয়াদ হতে পারে। তবে আমাদের উদ্দেশ্য তা নয়। আমাদের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা।”
সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুরো সরকারব্যবস্থা সংস্কার হবে। মানুষ নতুন কিছু চায়। সেখানে সব ক্ষেত্রে সংস্কার হবে। এমনকি সংবিধানও সংস্কার হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুটি প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলছে— নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সব সংস্কার শেষ করার প্রস্তুতি।গোটা দেশ নতুন কিছু চেয়েছে উল্লেখ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নতুন বাংলাদেশ শুধু নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।এখানে কোনও কিছু চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে জানতে চাইছি, তোমরা কি এখনই নির্বাচনে যেতে চাও নাকি এসব সংস্কার শেষ করা হোক তা চাও।”সবকিছু জনগণের সঙ্গে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের মতামতের ভিত্তিতেই হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পালিয়ে ভারতে অবস্থান করা শেখ হাসিনার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে সাক্ষাৎকারে। এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। সেখান থেকে বাংলাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিচ্ছেন। এগুলো বাংলাদেশের জন্য উপকারী নয়। তাই ভারতের কাছে তারা এসব বিষয়ে বলছেন। তাকে আশ্রয় দিচ্ছে, ঠিক আছে। কিন্তু এমনটা হতে থাকলে তাদের কাছে আবার অভিযোগ করা হবে।১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ একটি বিবৃতিতে দেয়। সেই বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।এ বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, “তিনি (শেখ হাসিনা) নিজেকে অনেক কিছু বলতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। এমনকি ভারতও তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছে। সুতরাং আশ্রয়দাতাও তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কিছু বলছে না।”
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আইনি প্রক্রিয়া চলছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার প্রত্যাবর্তন চাওয়া হবে।ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা করতে চান বলেও সাক্ষাৎকারে জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছর দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দেশকে বের করে চেষ্টা করছে তার নেতৃত্বাধীন সরকার। সূত্র: আল-জাজিরা
সম্প্রতি আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের (কপ২৯) ফাঁকে আল–জাজিরাকে এই সাক্ষাৎকার দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার সেই ভিডিও সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করা হয়।সাক্ষাৎকারে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ যেসব সংকট মোকাবিলা করছে, সেগুলো নিয়ে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে চলমান সংস্কারপ্রক্রিয়া, আগামী নির্বাচন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও কথা বলেছেন তিনি।বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের সঠিক সময় কখন হবে, সে বিষয়ে ড. ইউনূসের কোনও ভাবনা আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “না। আমার মাথায় এমন কিছু নেই।”
অন্তর্বর্তী সরকারের সময় সীমা কী হতে পারে, সে বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমরা অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা স্থায়ী সরকার নই। নিয়মিত সরকার পাঁচ বছরের হয়। নতুন সংবিধানে সরকারের মেয়াদ সম্ভবত চার বছর হতে পারে। কারণ, মানুষ সরকারের মেয়াদ কম চায়। সুতরাং এটা (অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ) চার বছরের কম হওয়া উচিত, এটা নিশ্চিত। এটা আরও কম হতে পারে। এটা পুরোটা নির্ভর করছে মানুষ কী চায়, রাজনৈতিক দলগুলো কী চায় তার ওপরে।”তিনি আরও বলেন, “যদি রাজনৈতিক দলগুলো চায় এটা (সংস্কার) ভুলে যাও, নির্বাচন দাও। তাহলে সেটা করা হবে।”তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান হিসেবে তিনি চার বছর থাকছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “আমি তা বলিনি যে চার বছর। আমি বলেছি, এটা সর্বোচ্চ মেয়াদ হতে পারে। তবে আমাদের উদ্দেশ্য তা নয়। আমাদের উদ্দেশ্য যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা।”
সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুরো সরকারব্যবস্থা সংস্কার হবে। মানুষ নতুন কিছু চায়। সেখানে সব ক্ষেত্রে সংস্কার হবে। এমনকি সংবিধানও সংস্কার হচ্ছে। এ লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্কার কমিশন করার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দুটি প্রক্রিয়া একসঙ্গে চলছে— নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং সব সংস্কার শেষ করার প্রস্তুতি।গোটা দেশ নতুন কিছু চেয়েছে উল্লেখ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নতুন বাংলাদেশ শুধু নির্বাচনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।এখানে কোনও কিছু চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে জানতে চাইছি, তোমরা কি এখনই নির্বাচনে যেতে চাও নাকি এসব সংস্কার শেষ করা হোক তা চাও।”সবকিছু জনগণের সঙ্গে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের মতামতের ভিত্তিতেই হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পালিয়ে ভারতে অবস্থান করা শেখ হাসিনার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে সাক্ষাৎকারে। এক প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেছেন, তিনি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। সেখান থেকে বাংলাদেশে বিক্ষোভের ডাক দিচ্ছেন। এগুলো বাংলাদেশের জন্য উপকারী নয়। তাই ভারতের কাছে তারা এসব বিষয়ে বলছেন। তাকে আশ্রয় দিচ্ছে, ঠিক আছে। কিন্তু এমনটা হতে থাকলে তাদের কাছে আবার অভিযোগ করা হবে।১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ একটি বিবৃতিতে দেয়। সেই বিবৃতিতে শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।এ বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, “তিনি (শেখ হাসিনা) নিজেকে অনেক কিছু বলতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। এমনকি ভারতও তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেছে। সুতরাং আশ্রয়দাতাও তাকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ছাড়া কিছু বলছে না।”
শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আইনি প্রক্রিয়া চলছে। দোষী সাব্যস্ত হলে তার প্রত্যাবর্তন চাওয়া হবে।ভারতের সঙ্গে অভিন্ন নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা করতে চান বলেও সাক্ষাৎকারে জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।তিনি আরও বলেন, গত ১৬ বছর দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল বাংলাদেশ। সেখান থেকে দেশকে বের করে চেষ্টা করছে তার নেতৃত্বাধীন সরকার। সূত্র: আল-জাজিরা